অক্সফোর্ড মিশন গীর্জা | বরিশাল

অক্সফোর্ড মিশন গীর্জা

অবস্থান | Location

অক্সফোর্ড মিশন গীর্জাটি বরিশাল জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বগুরা রোডের সাথে লাগোয়া দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। বরিশাল শহরের সদর রোড সংলগ্ন বিবির পুকুর পাড় থেকে বগুরা রোড ধরে প্রায় ১ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেলে লাল রংয়ের এ গীর্জাটি দেখা যায়। এটি এপিফানী গীর্জা বা ক্যাথেড্রাল হিসেবেও পরিচিত। বরিশাল জেলার অক্সফোর্ড মিশন গীর্জাটির জিও কো-অর্ডিনেট (অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ) হল 22°42’15.0″ N, 90°21’46.6″ E (22.704169, 90.362942)

স্থাপত‌্যিক বিবরণ | Architectural Description

অক্সফোর্ড মিশন গীর্জাটি গ্রিক স্থাপত্যশিল্পের এক নান্দনিক নিদর্শন। এ গীর্জাটির প্রায় ১৫ মিটার উঁচু। ইট দিয়ে নির্মিত এ গীর্জাটি ৪০টি খিলানের ভর করে দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রায় চারিদিকে বারান্দাবেষ্টিত এ গীর্জাটির প্রবেশপথসমূহে অর্ধ-বৃত্তাকার খিলানের (semi-circular arch) প্রতিফলন দেখা যায়। মূল প্রবেশপথটি গীর্জাটির উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত। গীর্জার প্রবেশপথের কপাটগুলো (door panels) খড়খড়িবিশিষ্ট (louver Shutter/venetian blind)। বিশাল আকৃতির এ গীর্জাটির অভ্যন্তরে নান্দনিক ১টি প্রার্থনা হল রয়েছে। এ প্রার্থনা হলের মেঝেতে ব্যবহার করা হয়েছে মার্বেল পাথরের টালি (tiles)। প্রার্থনা হলের মঞ্চের (stage) উপরে স্থাপন করা হয়েছে বড় আকারের ১টি ক্রস। গীর্জার অভ্যন্তর ও বাহির দেয়াল জুড়ে লাল রং দিয়ে রঞ্জিত করা হয়েছে। তবে গীর্জার অভ্যন্তরের বর্গাকার স্তম্ভের গায়ে রয়েছে সাদা রং। উচ্চতার বিচারে এ গীর্জাকে এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিবেচনা করা হয়। এছাড়া প্রাচীরবেষ্টিত এ গীর্জার আশে পাশে রয়েছে ছোট বড় ৩টি পুকুর, বিদ্যালয়, ছাত্র হোস্টেল, ফাদার ও সিস্টারদের জন্য আবাসন, পাঠাগার ও হাসপাতাল।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট | Historical Background

বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র পর্যালোচনা করে জানা যায় যে, ১৮৮৯ সালে ইংল্যান্ডের আর্চবিশপের আদেশে অ্যাংলিক্যান মিশনারিজের ১টি দল ভারতের মাদ্রাজ আগমন করে। ১৮৯৫ সালে তাদেরই ১টি দল বাংলাদেশে আগমন করে বরিশাল শহরে তাদের মিশনের কাজ শুরু করে। ১৯০৩ সালে এ মিশনের গীর্জাটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়। গীর্জাটি নির্মাণ কাজ শেষ করা হয় ১৯০৭ সালে। আরও জানা যায়, সিস্টার এডিথের স্কেচ ও নকশা অনুসারে ফাদার স্ট্রং গীর্জার এ ভবনটির নকশা উন্নত ও চূড়ান্ত করেন। ফ্রেডিরিক ডগলাস নামে একজন ব্রিটিশ এ গীর্জা নির্মাণ কাজের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন বলে জানা যায়। গীর্জার দেয়াল গাত্রে ইংরেজিতে উৎকীর্ণ লিপিফলকে উল্লেখ রয়েছে যে,

‘‘Centenary Celebration of Oxford Mission
in Bangladesh
Brotherhood and Sisterhood  of
Epiphany
1895 – 1995
Celebrated on 21-22nd January, 1995 at Barisal
May God be Glorified by his Children
in Every Generation’’

উপর্যুক্ত লিপিফলকের ভাষ্য অনুযায়ী বলা যায় যে, ১৮৯৫ সালে বরিশালে এ মিশনের কার্যক্রম শুরু করা হয়।

লেখক: মো. শাহীন আলম  

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *