পানি (water): কাজ, উৎস এবং অভাবজনিত অবস্থা

পানির কাজ, উৎস এবং অভাবজনিত অবস্থা:

মানুষের জীবনধারণের জন্য পানির (water) প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। প্রাপ্তবয়সে দৈনিক ২-৩ লিটার বিশুদ্ধ পানি পান করা আবশ্যক। এছাড়া খাবার থেকে দৈনিক প্রায় ১ লিটার পানি শরীরে প্রবেশ করে। দেহের গঠনে সকল উপাদানের মধ্যে পানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। দেহের সকল কোষে পানি থাকে। দেহের প্রায় ৭০% পানি। পানি সাধারণত কোষের মধ্যে ৫০%, কোষের বাহিরে থাকে ২০%। এ ২০% এর মধ্যে ৫% রক্তে এবং ১৫% দুই কোষের মধ্যবর্তী স্থানে। মানুষের শরীর থেকে দৈনিক প্রায় ১.৫ লিটার পানি দেহ থেকে বের হয়ে যায়। তবে মানুষের দেহে পানির চাহিদা নানা কারণে বেড়ে যায়। যেমন – গ্রীষ্মের সময় অত্যাধিক গরমে ঘাম হলে, জ্বর, ডায়রিয়া, বমি, স্তন্যদানকালে, খেলাধুলা ও দৈহিক পরিশ্রম করলে।

Water boliing, পানি

কাজ (functions): পানি মানুষের দেহে যে সব কাজ করে, সে সব হলো:
১। পানি খাদ্যের পরিপাক ও শোষণে এবং পুষ্টি পরিবহনে সহায়তা করে।
২। দেহের বিপাক ক্রিয়ার ফলে উৎপন্ন বর্জ্য পদার্থ দেহ থেকে বের করে দেয়।
৩। দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং রক্তের তারল্য বজায় রাখে।
৪। কোষের মধ্যে যে বিক্রিয়া সংঘটিত হয়, তা পানির মধ্যে দ্রবীভূত অবস্থায় হয়।
৫। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং শরীর সুস্থ-সবল রাখে।

উৎস (sources): পানযোগ্য বিশুদ্ধ খাবার পানি, দুধ, ডাবের পানি, স্যুপ, ফলের রস, বিভিন্ন ধরনের পানীয়।

অভাবজনিত অবস্থা (deficiencies): পানির অভাবে মানব দেহে যে সব অবস্থা হতে পারে, সে সব হলো:
১। বমি, ডায়রিয়া, জ্বর হলে দেহ থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে যায়, ফলে পানিশুষ্কতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা দেয়।
২। দেহের পরিপাক ও বিপাক ক্রিয়া ব্যাহত হয়।
৩। রক্তের তারল্য নষ্ট হয় ও মাংসপেশি দুর্বল হয়ে যায়।
৪। ঠোঁট শুকিয়ে যায় ও চোখ জ্বালা করে।
৫। কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয়।

সুতরাং পানি শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে, তাই শরীর সুস্থ -সবল এবং কর্মক্ষম রাখার জন্য আমাদের পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাদ্যের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি খাওয়া দরকার। [ইশরাত জাহান মিম]


সহায়িকা: সুলতানা, প্রফেসর রাফিকা; আরা, গাজী হোসনে; (২০২০); গার্হস্থ বিজ্ঞান (একাদশ-দ্বাদশ), ঢাকা: কাজল ব্রাদার্স লিমিটেড, পৃষ্ঠা ২২২, ২২৩।


Leave a Reply