প্রাচীন সভ্যতার কীর্তির সময় নির্ণয়ে কার্বন বয়োমাপন
পৃথিবীর জীবজগৎ মূলত হাইড্রোজেন, নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও কার্বন নামক ৪টি মৌলের উপরে নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত। এর মধ্যে কার্বন প্রায় সকল প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহে রয়েছে। কার্বনের আবার ৩টি আইসোটোপ (isotope) রয়েছে। এগুলো হল- কার্বন-১২ (carbon-12), কার্বন-১৩ (carbon-13) ও কার্বন-১৪ (carbon-14)। এর মধ্যে কার্বন-১৪ আইসোটোপটি খুবই তেজস্ক্রিয়। তাই একে রেডিও কার্বন (radioactive carbon) বলা হয়। কার্বন-১৪ আইসোটোপটির হৃাসের হার নির্ণয় করে বয়স বের করাকে কার্বন বয়োমাপন বা কার্বন ডেটিং (carbon dating) বা রেডিও কার্বন বয়োমাপন (radiocarbon dating) বলা হয়।
জীবদ্দশায় প্রাণী ও উদ্ভিদ প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে কার্বন গ্রহণ করে। আবার এদের মৃত্যুর সাথে সাথে কার্বন গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়। কার্বনের আইসোটোপগুলোর মধ্যে কার্বন-১২ স্থায়ী ও কার্বন-১৪ অস্থায়ী প্রকৃতির। মৃত্যুর পরে প্রাণী ও উদ্ভিদের দেহ থেকে কার্বন-১৪ পরিমাণে ধীরে ধীরে হৃাস পেতে থাকে। মৃত্যুর পর দিন যত বাড়তে থাকে, কার্বন-১৪ পরিমাণে তত কমতে থাকে। প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবাশ্ম বা দেহাবশেষের (fossil) কার্বন-১৪ হৃাসের হার নির্ণয়ের মাধ্যমে প্রাচীন সভ্যতার বিভিন্ন কীর্তির বয়স জানা যায়। পারমাণবিকভাবে সক্রিয় যে কোন মূল দ্রব্যের সাথে ক্ষয়প্রাপ্ত খনিজ দ্রব্যের বয়সের অনুপাত হিসেব করে রেডিও এ্যাকটিভ সময় (radioactive dating) নির্ণয় করা হয়। [মো. শাহীন আলম]
তথ্যসূত্র: ১. বাকী, আবদুল, ভুবনকোষ, সুজনেষী প্রকাশনী: ঢাকা, ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫৬-৫৭।