বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ

বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ

অবস্থান | Location

বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠটি বরিশাল জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্রে বি.এম. কলেজ রোডের সাথে লাগোয়া দক্ষিণ পাশে অবস্থিত। বরিশাল বি. এম. কলেজ থেকে কলেজ রোড ধরে প্রায় ২৫০ মিটার পূর্ব দিকে এগিয়ে গেলে নতুন বাজার মোড় সংলগ্নে এ মিশন ও মঠটি দেখা যায়। বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠটির ভূ-স্থানাঙ্ক বা জিও কো-অর্ডিনেট (GeoCoordinate) হল 22°42’41.5″ N, 90°21’33.8″ E (22.711514, 90.359388)

স্থাপত‌্যিক বিবরণ | Architectural Description

বরিশাল রামকৃষ্ণ মিশনের রয়েছে মঠ, আশ্রম, ছাত্র হোস্টেল, দাতব্য চিকিৎসালয়, গ্রন্থাগার ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এ মিশনের অভ্যন্তরে অবস্থিত স্থাপনাসমূহের মধ্যে মঠটি দেখতে খুবই নান্দনিক। মঠটি আয়তাকার পরিকল্পনায় নির্মিত। মঠটির ছাদ সমতল হলেও এর এ পূর্বাংশে ৫টি গম্বুজ (dome/spire) এবং পশ্চিমাংশে ১টি আটচালা গম্বুজ রয়েছে। ৫টি গম্বুজের অবস্থান দেখে প্রতীয়মান হয় যে, এতে পঞ্চরত্ন (five jewel/spire) মঠ/মন্দিরের প্রতিফলন হয়েছে। মঠটির ছাদের চারদিকে মারলন নকশার প্রতিফলন দেখা যায়। প্রায় আধুনিক এ স্থাপত্যিক নিদর্শনটির সামনের ৩টি প্রবেশ পথ রয়েছে।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট | Historical Background

স্বামী বিবেকানন্দ (১৮৬৩-১৯০২) শ্রী রামকৃষ্ণের ধর্মীয় একত্বানুভূতি ও জীবন দর্শনকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার জন্য ১৮৯৭ সালে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলায় গঙ্গা তীরবর্তী বেলুড়ে প্রতিষ্ঠা করেন রামকৃষ্ণ মিশন। কালক্রমে এটি শ্রী রামকৃষ্ণের দর্শন প্রচারের প্রধান কেন্দ্রে পরিণত হয়। যা রামকৃষ্ণ সংঘ বা বেলুড় মঠ নামে পরিচিতি। বর্তমানে এটি একটি আধ্যাত্মিক ও সমাজসেবামূলক প্রতিষ্ঠান। শ্রী রামকৃষ্ণ বিশ্বাস করতেন যে, সকল ধর্মই সত্য এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ ধর্মীয় পথে সাধনা করে ঈশ্বরের অভিমুখে এগিয়ে যেতে পারে।  

১৮৯৯ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। যা ১৯১৬ সালে বেলুড় মঠের স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯০৪ সালে বরিশাল শহরের এ রামকৃষ্ণ মিশনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে রামকৃষ্ণ মিশনের শাখা কেন্দ্র রয়েছে। 

সকল ধর্মের মানুষের জন্যই রামকৃষ্ণ মিশনের কার্যক্রম উন্মুক্ত। বিভিন্ন পূজাসহ ইসলাম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মের বিশেষ পর্ব উপলক্ষে রামকৃষ্ণ মিশনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এছাড়া রামকৃষ্ণ মিশন ধর্মীয় একত্বানুভূতিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষা ও সংস্কৃতিমূলক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করে থাকে।

লেখক: মো. শাহীন আলম  

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *