বামন দুমুখো সাপ | Brahminy Blind Snake
বামন দুমুখো সাপ [Brahminy Blind Snake] – অনেকের কাছে অন্ধ সাপ বা কেঁচো সাপ নামেও পরিচিত। বামন দুমুখো সাপের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিম্নে তুলে ধরা হল:
পরিবার : বামন দুমুখো সাপ টাইফ্লোপিডি (Typhlopidae) পরিবারভূক্ত।
ইংরেজি নাম : বামন দুমুখো সাপের ইংরেজি নাম হল ব্রাহমিনি ব্লাইন্ড স্নেক বা কমন ব্লাইন্ড স্নেক বা ব্রাহমিনি ওয়ার্ম স্নেক (Brahminy Blind Snake or Common Blind Snake or Brahminy worm Snake)।
বৈজ্ঞানিক নাম : বামন দুমুখো সাপের বৈজ্ঞানিক নাম হল র্যাম্ফেটাইফ্লোস ব্রামিনাস (Ramphotyphlops braminus)।
বিবরণ : বামন দুমুখো সাপ হল এক প্রকারের ক্ষুদ্রাকার অন্ধ সাপ। এ সাপের দৈর্ঘ্য সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার থেকে ১২.৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এ সাপ দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ২৩ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। এদের সদ্য ফোটা বাচ্চাগুলো প্রায় ৫ সেন্টিমিটার হয়ে থাকে। এ সাপগুলো দেখতে কেঁচোর মত। নলাকার এ সাপের দেহ খণ্ডবিশিষ্ট নয়। তবে এদের দেহে ঘন সন্নিবিষ্ট চকচকে ছোট ছোট আঁশে আবৃত থাকে। দেহের উপরের অংশ লালচে-বাদামী এবং নিচের অংশ হালকা বাদামী হয়ে থাকে। এ সাপের মাথা ঘাড় থেকে পৃথক নয়। বামন দুমুখো সাপের ক্ষুদ্র চোখগুলো কালো ফোঁটার মত দেখায়। এ সাপের লেজের আগা কিছুটা চোখা প্রকৃতি হয়ে থাকে।
স্বভাব : বামন দুমুখো সাপ সাধারণত মাটির নিচে একাকী বাস করে। ভারী বৃষ্টিপাতের পর এ সাপকে মাটির উপরে গড়াতে দেখা যায়। বামন দুমুখো সাপ সাধারণত অবিষধর (বিষধর নয়)।
খাবার : বামন দুমুখো সাপগুলো সাধারণত কীটপতঙ্গভুক। এ সাপ পিঁপড়া ও উইপোকা এবং পিঁপড়া ও উইপোকাদের ডিম ও লার্ভা খেয়ে জীবন ধারণ করে থাকে।
আবাসন : বামন দুমুখো সাপ সাধারণত মাটির নিচে অবস্থিত পিঁপড়া এবং উইপোকার বাসায় বাস করে। এছাড়া এ সাপগুলো আর্দ্র বন, শুষ্ক জঙ্গল, গ্রামীণ কৃষি জমি, গ্রামীণ ও শহরের বাগানসহ মানুষের আবাস এলাকা প্রভৃতিতে বসবাস করে থাকে। এ সাপগুলো সচরাচর দেখা যায়।
বংশবৃদ্ধি ও অবস্থা : বামন দুমুখো সাপ হল একলিঙ্গবিশিষ্ট, এরা সবই স্ত্রী সাপ। পুরুষ সাপ ব্যতিত এক লিঙ্গিক প্রজনন প্রক্রিয়াযর মাধ্যমে বামন দুমুখো সাপ বংশবিস্তার করে থাকে। এ সাপ একই সাথে ৩ থেকে ৭টি পর্যন্ত উর্বর ডিম পাড়ে। চাল আকৃতির ডিম থেকে ফুটে কেবল স্ত্রী বাচ্চা জন্মায়। বাংলাদেশের সর্বত্রই বামন দুমুখো সাপ ব্যাপকভাবে বিস্তৃত রয়েছে। [সংকলিত]
তথ্য সূত্র : বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী, ২০১৫, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৮৪।
আলোকচিত্র সূত্র: Indotyphlops braminus