মহাকাশের কি কোনো সীমা আছে?
এ সৃষ্টি জগতে যা কিছু আছে তাই মহাকাশ। গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, ধুমকেতু, ধূলিকণা, গ্যালাক্সি, তারা প্রভৃতি নিয়ে মহাকাশ গঠিত। আমরা আকাশের দিকে তাকালে দূর দূরান্তের অনেক বস্তু দেখতে পাই। দিনের আকাশের সূর্য রাতের আকাশের গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র ইত্যাদি আমাদের চোখে ধরা পড়ে। আমরা যদি দূরবীক্ষণ দিয়ে আকাশের দিকে তাকাই আরও অনেক কিছু দেখতে পাই। বৃহস্পতি গ্রহ তার উপগ্রহসহ জ্বলজ্বল করতে থাকে। গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, গ্যালাক্সি, ইত্যাদির মাঝখানে যে খালি জায়গা, তাকে মহাকাশ বা মহাশূন্য বলে। মহাকাশের দিকে তাকালে আমরা যে সব বস্তু দেখতে পাই তা হলো পদার্থ, যেমন: আমাদের এই পৃথিবী। মহাকাশ কোনো পদার্থ দিয়ে তৈরি নয়। মহাকাশ বলতে পদার্থের অনুপস্থিতিকে বোঝায়। এটা হলো সেই ফাঁকা জায়গা বা অঞ্চল যেখান দিয়ে পৃথিবী, চাঁদ, সূর্য ও তারকারাজি চলাচল করে।
যেখান থেকে মহাকাশের শুরু: পৃথিবীর মতো এর বায়ুমন্ডলও মহাকাশে ঘুরছে। এ কারণে বায়ুমন্ডলকে মহাকাশের অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। একে পৃথিবীর অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখন প্রশ্ন হলো কোথা থেকে বায়ুমন্ডলের শেষ এবং মহাকাশের শুরু? অধিকাংশ বায়ুমন্ডল পৃথিবীর বেশ কাছাকাছি। পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব যত বাড়তে থাকে বায়ুমন্ডল তত হালকা হতে থাকে এবং ১৬০ কিলোমিটারের পর বায়ুমন্ডল থাকে না বললেই চলে। অধিকাংশ বিজ্ঞানী মনে করেন যে, পৃথিবী থেকে ১৬০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমন্ডলের শেষ এবং মহাকাশের শুরু।
মহাকাশের সীমা: এক সময় মানুষ ভাবত, মহাকাশের সীমা আছে। তারা ভাবত যে, যত দূর পর্যন্ত সবচেয়ে দূরের বস্তুটি তারা দেখতে পায়, সে পর্যন্তই মহাকাশ বিস্তৃত এবং মহাকাশ বক্রাকৃতির। পরবর্তীতে দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কারের পর মানুষ দৃষ্টি সীমার বাহিরের অনেক গ্রহ, নক্ষত্র, ধূমকেতু ও গ্যালাক্সি দেখতে পেল। তারা সিদ্ধান্তে এলো যে, মহাকাশের কোন শেষ বা সীমা নেই।
সুতরাং, মহাকাশ সম্পূর্ণরূপে ফাঁকা একটি শূন্যস্থান নয়। এটিতে খুব কমই ঘনত্বের কণা থাকে, যাদের সিংহভাগই হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্লাজমা দিয়ে গঠিত। এছাড়া মহাকাশে তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ, চৌম্বক ক্ষেত্রসমূহ, নিউট্রনো, মহাজাগতিক ধূলি ও মহাজাগতিক রশ্মিসমূহ বিদ্যমান।
মহাকাশে একাধিক নক্ষত্রের অস্তিত্ব আবিষ্কৃত হয়েছে। মহাকাশের নক্ষত্র সূর্যকে কেন্দ্র করে মোট আটটি গ্রহ রয়েছে। গ্রহগুলি সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে এবং এদের নিজস্ব আলো নেই। বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস, ও নেপচুন। [ইশরাত জাহান মিম]