মিছিল – রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ
যে যাবে না সে থাকুক, চলাে, আমরা এগিয়ে যাই।
যে-সত্য জেনেছি পুড়ে, রক্ত দিয়ে যে-মন্ত্র শিখেছি,
আজ সেই মন্ত্রের সপক্ষে নেবাে দীপ্র হাতিয়ার।
শ্লোগানে কাঁপুক বিশ্ব, চলাে, আমরা এগিয়ে যাই।
প্রথমে পােড়াই চলাে অন্তর্গত ভীরুতার পাপ,
বাড়তি মেদের মতাে বিশ্বাসের দ্বিধা ও জড়তা।
সহস্র বর্ষের গ্লানি, পরাধীন স্নায়ুতন্ত্রীগুলাে,
যুক্তির আঘাতে চলাে মুক্ত করি চেতনার জট।
আমরা এগিয়ে যাবাে শ্রেণিহীন পৃথিবীর দিকে,
আমাদের সাথে যাবে সংগ্রামের দীর্ঘ ইতিহাস,
অনার্যের উষ্ণ লহু, সংঘশক্তি, শিল্পে সুনিপুণ
কর্মঠ, উদ্যমশীল, বীর্যবান শ্যামল শরীর।
আমাদের সাথে যাবে ক্ষেত্ৰভূমি, খিলক্ষেত্র, নদী,
কৃষি সভ্যতার স্মৃতি, সুপ্রাচীন মহান গৌরব।
কার্পাশের দুকূল, পত্রোর্ন আর মিহি মসলিন,
আমাদের সাথে যাবে তন্ত্র-দক্ষ শিল্পীর আঙুল।
চলাে, আমরা এগিয়ে যাই। আমাদের সাথে যাবে
বায়ান্নর শহিদ মিনার, যাবে গণ-অভ্যুত্থান,
একাত্তর অস্ত্র হাতে সুনিপুণ গেরিলার মতাে।
আমাদের সাথে যাবে ত্রিশ লক্ষ রক্তাক্ত হৃদয়। [সংক্ষেপিত]
মিছিল কবিতাংশের শব্দার্থ: পরাধীন – অন্যের অধীন। কর্মঠ – কাজে পারদর্শী, পরিশ্রমী। উদ্যমশীল – আগ্রহ রয়েছে এমন।
দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মন্ত্রে পথ চলতে রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ তাঁর মিছিল কবিতায় কতিপয় প্রেরণার কথা তুলে ধরেছেন। [সংকলিত]