আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ক্লাসিক্যাল তত্ত্ব এবং আধুনিক তত্ত্ব
ক. ক্লাসিক্যাল তত্ত্ব (classical theory): আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ্যাডাম স্মিথ সর্বপ্রথম এই তত্ত্বের প্রবর্তন করেন। ক্লাসিক্যাল তত্ত্বকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মৌলিক তত্ত্ব হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। ক্লাসিক্যাল তত্ত্বটি তুলনামূলক তত্ত্ব বা আপেক্ষিক ব্যয় তত্ত্ব বা সুবিধা তত্ত্ব হিসেবে পরিচিত। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন অনুষ্ঠিত হয় এবং আমদানি ও রপ্তানি দ্রব্যের দাম কীভাবে নির্ধারিত হয়, তা ক্লাসিক্যাল তত্ত্বের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়।
অধ্যাপক এ্যাডাম স্মিথকে ক্লাসিক্যাল তত্ত্বের জনকও বলা হয়। তবে এ্যাডাম স্মিথ এই তত্ত্বের সূত্রপাত করলেও পরবর্তীকালে রিকার্ডো তত্ত্বটির সুষ্ঠু ব্যাখ্যা প্রদান করেন। রিকার্ডোর মতে, “প্রত্যেকটি দেশ সে সব দ্রব্য উৎপাদন করবে, যার উৎপাদন খরচ তুলনামূলকভাবে কম এবং যে সব দ্রব্য উৎপাদন করতে তুলনামূলকভাবে বেশি খরচ পড়ে, তা বিদেশ থেকে আমদানি করবে।
খ. আধুনিক তত্ত্ব (modern theory): বিখ্যাত সুইডিশ অর্থনীতিবিদ হেকসার ওলীন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আধুনিক তত্ত্বটি প্রচার করেন। ওলীনের মতে, গুণগত দিক হতে দুই জন ব্যক্তি যেমন একরকম না, তেমনি উৎপাদনের উপকরণের দিক থেকেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ একরকম সমৃদ্ধ নয়। দুইটি দেশের মধ্যে কোনো পণ্যের চাহিদা সমান বা কম বেশি হলে অথবা কোনো দেশ কারিগরি দিক থেকে উন্নত হলে, অথবা কোনো দেশে উপাদানের পর্যাপ্ততা বিরাজ করলে দুইটি দেশের মধ্যে বাণিজ্য অনুষ্ঠিত হবে।
বিভিন্ন ব্যক্তির মধ্যে গুণগত পার্থক্যের জন্য যেমন শ্রমবিভাগ দেখা যায়, তেমনি বিভিন্ন দেশের মধ্যে উৎপাদনের উপকরণের বিভিন্নতার দরুন আন্তর্জাতিক বিশেষীকরণের সৃষ্টি হয়। অতএব, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মৌলিক কারণ উপকরণ সম্ভারের পার্থক্য এবং প্রত্যেক দেশ ঐ সব দ্রব্য রপ্তানি করে, যে মব দ্রব্য তুলনামূলকভাবে সে দেশে প্রচুর উৎপাদন হয়। এটাই হেকসার-ওলীন তত্ত্বের মূল বক্তব্য।
পরিশেষে বলা যায়, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই তত্ত্ব দুইটি উপস্থাপনের মাধ্যমে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। যা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য মঙ্গলজনক। [শারমিন জাহান সায়মা]
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বিভিন্ন তত্ত্ব
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL