একটি আদর্শ প্রতিবেদন প্রণয়নের প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি
গবেষণা কাজে একটি আদর্শ প্রতিবেদন প্রণয়নের জন্য কিছু রীতিনীতি মেনে চলা উচিত। একজন গবেষক তার অধ্যয়নলব্ধ ধারণা থেকে কিংবা তার তত্ত্বাবধায়কের (supervisor) নিকট থেকে নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে তার প্রতিবেদন প্রণয়ন করেন। যে সব প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলি মেনে একটি আদর্শ প্রতিবেদন প্রণয়ন করতে হয়, সে সব নির্দেশাবলি সম্পর্কে নিচে আলোকপাত করা হলো:
১. প্রতিবেদন প্রণয়নে এমন শব্দ ব্যবহার করতে হবে, যেন গবেষণা বিষয়ের সঠিক অর্থ প্রকাশ পায়। এর ভাষা হবে সহজ সরল, যেন পাঠক প্রতিবেদনটি সহজভাবে উপলব্ধি করতে পারেন।
২. প্রতিবেদন প্রণয়নের সময় প্রয়োজনীয় সকল রীতিনীতি অনুসরণ করতে হবে, যেন তা উপযুক্ত মানসম্পন্ন হয়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত সকল প্রত্যয় ও পদসমূহের সংজ্ঞা ও ব্যাখ্যা থাকা অপরিহার্য।
৩. একটি আদর্শ প্রতিবেদনের প্রকাশভঙ্গি হবে নৈর্ব্যক্তিক, যথাযথভাবে সংক্ষিপ্ত ও পরিষ্কার।
৪. গবেষক কর্তৃক প্রতিবেদন লেখার সময় একমাত্র উদ্ধৃতি ব্যতিত personal pronoun ব্যবহার করা যাবে না। তৃতীয় পুরুষ (third person) এ প্রতিবেদন প্রণয়ন অপরিহার্য।
৫. প্রতিবেদন প্রণয়নে জটিল ও ভাবগম্ভীর প্রত্যয়কে যথাসম্ভব সহজ সরল ভাষায় এবং ছোট বাক্যে প্রকাশ করতে হবে।
৬. এক কথায় সব সময় মনে রাখতে হবে যে, প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ঘটনা কোনো সময় বর্তমানকাল বিবেচনায় বর্ণিত হয় না। অতীতকাল (past tense) ব্যবহার করে প্রতিবেদন রচনা অপরিহার্য।
৭. প্রতিবেদনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত একই রকম বানানরীতি, সংক্ষিপ্তকরণ রীতি, যতিচিহ্ন ও বিভক্তি ব্যবহার করতে হবে। গবেষণালব্ধ তথ্যাবলি সততার সাথে এবং যৌক্তিক আকারে উপস্থাপন করা জরুরি।
৮. গবেষণা একটি নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক কর্ম। এক্ষেত্রে প্রতিবেদন রচনায় কোনো আঞ্চলিক ভাষায় এবং আবেগ উচ্ছ্বাসজনিত ভাষার প্রয়োগ করা উচিত নয়।
৯. প্রতিবেদনে সঠিকভাবে উদ্ধৃতি (reference) দিতে হবে এবং যথাস্থানে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করা উচিত। এছাড়াও কাঠামো, বিষয়বস্তু, সংগঠন ও উপস্থাপনে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা প্রয়োজন।
১০. প্রতিবেদন মুদ্রণের সময় যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করে যত্নসহকারে কাজ করতে হবে। কোনো প্রতিবেদন মুদ্রিত আকারে প্রকাশিত হলে সতর্কতার সাথে প্রুফ (proof) দেখা উচিত এবং বানানের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে ভুল মুদ্রণ গবেষণার মানকে ক্ষুণ্ন করতে পারে।
পরিশেষে বলা যায়, প্রতিবেদন প্রণয়নের ক্ষেত্রে উপরে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসমূহ মেনে চলা উচিত। যথাযথ নির্দেশনা মেনে একটি প্রতিবেদন রচনা করা হলে তা সর্বত্র গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। [শারমিন জাহান সায়মা]
সহায়িকা: আলাউদ্দিন, প্রফেসর ড. মোঃ; উদ্দীন, প্রফেসর ড. মোঃ সেরাজ; আতিকুজ্জামান, এম. এম.; প্রধান, মোঃ সাইফুল্লাহ; (জানুয়ারি, ২০১৯); ব্যবসায় গবেষণা Business Research; গ্রন্থ কুটি: ঢাকা; পৃষ্ঠা- ৩০২।
আদর্শ প্রতিবেদন প্রণয়নের নির্দেশাবলি
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL