ক্যান্সার | Cancer

ক্যান্সার গোটা মানব জাতির জন্য আজ এক মহাঅভিশাপ। এ ভয়াবহ অভিশাপ থেকে রেহাই পেতে, স্বাস্থ্য ফিরে পেতে, সুখী সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে সত্যিকার আরোগ্য নীতির অনুসন্ধানে এ প্রয়াস। ৩০/৩২ বছর আগেও ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ছিল খুবই কম। এন্টিবায়োটিক ঔষধ, পেনিসিলিন জাতীয় ঔষধ ও ইনজেকশনপূর্ব যুগে ক্যান্সারের প্রায় নাম গন্ধই ছিল না, তবে এখন ক্যান্সারে শতকরা ৪০ ভাগ রোগী মারা যাচ্ছে।

an x-ray of a person's body, Cancer, ক্যান্সার
ক্যান্সার, image: wikimedia.org

চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের অক্লান্ত পরিশ্রমে কেমোথেরাপী, রেডিও-থেরাপী যত চিকিৎসা কৌশল বা প্রযুক্তি মানব সমাজকে উপহার দেয়া হচ্ছে রোগীর মৃত্যুকে তত দ্রুত যেন এগিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

তবে ক্যান্সার যাতে না হয় কিংবা হলেও রোগীকে যাতে বাঁচানো যায়, তার জন্য সাধারণ মানুষকে, রোগী বা রোগীর আত্মীয়-স্বজনকে, রোগীর চিকিৎসককে মৌলিক কথাগুলো জানতে হবে- অন্যথায় চিকিৎসার জৌলুস দিয়ে, রোগীর টাকার প্রাচুর্য দিয়ে রোগীকে বাঁচানো যায় না। সাধারণ মানুষকেও বেহুদা অর্থের অপচয় করে পুষ্টিকর খাদ্য খেয়ে আর দামী দামী ওষুধ সেবন করে মৌলিক তত্ত্ব না পেলে ক্যান্সারের হাত থেকে বাঁচা সম্ভব নয়। তাই নিম্নে ক্যান্সার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা এবং কিভাবে ক্যান্সার নির্মূল করতে পারি, সে বিষয়গুলো উল্লেখ করা যেতে পারে।

প্রথমেই জানি ক্যান্সার আসলই কি? এবং কিভাবে শরীরে এর বিস্তার ঘটে :

বংশগত কারণে অথবা অর্জিত রোগের জন্য উচ্চ মানের এন্টিবায়োটিকের অসম্পূর্ণ চিকিৎসা, হাতুড়ে বা চাপা দেয়ার চিকিৎসার কুফল হিসেবে, বিবিধ রোগের পরিণতিতে, মানসিক অশান্তি, অস্বস্তির ফলে ঘুম, খাওয়া দাওয়া, ইত্যাদির অনিয়ম শরীরের জীবকোষগুলো এলোপাথাড়িভাবে জড়ো হতে থাকে, বহুদিন ধরে যে অঙ্গে যিনি বেশী দুর্বল, সে অঙ্গেই জীব কোষ জড়ো হতে থাকলে অর্বুদ বা টিউমার গঠিত হয়। টিউমার দিন দিন বেড়েই চলে। টিউমার বাড়ার সাথে সাথে তাদের মন ও শরীর দিন দিন ক্রমশ অবনতির দিকে যেতে থাকে। জীবনী শক্তি ক্ষয় পেতে থাকে এবং টিউমারে আস্তে আস্তে বেদনা এবং জ্বালা যন্ত্রণা দেখা দিতে থাকে। এমন অবস্থায় যদি কেউ টিউমারের ব্যথা-যন্ত্রণায় কাতর হয়ে সার্জনের চাকু বা চিকিৎসকের ‘কেমো-থেরাপী’ বা ‘রেডিও-থেরাপী’র আশ্রয় নেন, হয়তো সাময়িকভাবে জ্বালা যন্ত্রণা, ব্যথা-বেদনা কমতে পারে, কিন্তু টিউমার অবস্থায় যে কোষগুলো এলোমেলো জট বেঁধেছিল, তা ঐ যান্ত্রিক নিপীড়নে সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। সমস্ত শরীর তখন ক্যান্সার কোষ ভর্তি হয়ে যায়। ক্ষয়প্রাপ্ত জীবনী শক্তি তখন আর জীবকোষকে তাজা রাখতে সক্ষম হয় না। দেহে জীবনী শক্তি হারিয়ে প্রাণ শক্তিকে আর ধরে রাখতে পারে না।

গলায় বা কণ্ঠে যে দুর্বল একটুতেই যার টনসিল ফুলে ওঠে, একটুতেই যার স্বর বসে যায়, তার ফেরিংগাইটিস হতে পারে, অনিয়ম ও বংশগত বা অর্জিত দোষ প্রবল হলে ক্যান্সারও হতে পারে। এভাবে লিভারে হলে ‘সিরোসিস অব লিভার,’ হাড়ে ক্ষয় দেখা দিলে ওস্টিওমা, লান্সে, স্তনে, জিহ্বাতে, ঠোঁটে, ব্রেনে- সর্বতোভাবে যে কোনো অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে বিভিন্ন নামে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে।

ক্যান্সার হতে বাঁচার উপায়:

ক্যান্সারের এ পরিস্থিতির কারণে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা তাই এক সুরে আওয়াজ তুলছেন: “Cancer has no answer”- অর্থাৎ ক্যান্সার হয়ে গেলে তার আর কোনো চিকিৎসা নেই। তবে ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হিসেবে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন,

ক) ওশ স্টেট মেডিকেল ইউনিভার্সিটি, মস্কো, রাশিয়ার ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. গুপ্তপ্রসাদ রেড্ডি (বি ভি) বলেছেন, ক্যান্সার কোনো মরণব্যাধি নয়, কিন্তু মানুষ এই রোগে মারা যায় শুধুমাত্র উদাসীনতার কারণে। তার মতে, মাত্র দুটি উপায় অনুসরণ করলেই উধাও হবে ক্যান্সার। উপায়গুলো হচ্ছে:-

১. প্রথমেই সব ধরনের সুগার বা চিনি খাওয়া ছেড়ে দিন। কেননা, শরীরে চিনি না পেলে ক্যান্সার কোষগুলো এমনিতেই বা প্রাকৃতিকভাবেই বিনাশ হয়ে যাবে।

২. এরপর এক গ্লাস গরম পানিতে একটি লেবু চিপে মিশিয়ে নিন। টানা তিন মাস সকালে খাবারের আগে খালি পেটে এই লেবু মিশ্রিত গরম পানি পান করুন। উধাও হয়ে যাবে ক্যান্সার।

খ) মেরিল্যান্ড কলেজ অব মেডিসিন- এর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, কেমোথেরাপির চেয়ে হাজার গুণ ভালো হলো: প্রতিদিন সকালে ও রাতে তিন চা চামচ অর্গানিক নারিকেল তেল খান, ক্যান্সার সেরে যাবে।

চিনি পরিহারের পর উল্লেখিত দুটি থেরাপির যে কোনো একটি গ্রহণ করুন। ক্যান্সার আপনাকে ঘায়েল করতে পারবে না। তবে অবহেলা বা উদাসীনতার কোনো অজুহাত নেই। [ইশরাত জাহান মিম]


সংকলিত: বিশেষজ্ঞ রেড্ডি, ডাক্তার আবদুল মালেক, স্বাস্থ্যশিক্ষা ও ইসলাম (২০০৫), প্রকাশক: ড. সৈয়দ শাহ্ এমরান,পৃষ্ঠা ৭৪ – ৭৫।


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply