তথ্য ব্যবস্থায় কম্পিউটারের ভূমিকা
তথ্য ব্যবস্থায় কম্পিউটারের ভূমিকা:
সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সমস্যা সমাধানের জন্য ডেটা (data) বা তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ, সংগঠন এবং ব্যবহার উপযোগী করে উপস্থাপন বা সরবরাহ করাই হলো তথ্য ব্যবস্থা। কম্পিউটার আবিষ্কারের পূর্বেও তথ্য ব্যবস্থার অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। তবে তখন ডেটাকে তথ্যে রূপান্তর বা সংরক্ষণের কাজটি হাতে কলমে (by hand) বা ম্যানুয়ালী (manually) করা হতো। কিন্তু কম্পিউটারের আবিস্কার এক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনয়ন করেছে। কম্পিউটার ব্যবহার করে সহজেই, স্বল্প সময়ে এবং স্বল্প ব্যয়ে তথ্য ব্যবস্থার কাজ সম্পাদন সম্ভব হচ্ছে। নিচে তথ্য ব্যবস্থায় কম্পিউটারের ভূমিকা তুলে ধরা হলো।
১. ডেটা বা উপাত্ত সংগ্রহ করা (data collection): তথ্য ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো ডেটা বা উপাত্ত সংগ্রহ করা। এক্ষেত্রে কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে বিশাল তথ্য ভান্ডার হতে প্রয়োজনীয় ডেটাসমূহ সহজেই সংগ্রহ করা সম্ভব।
২. উপাত্ত বিন্যস্তকরণ (data organise): বিক্ষিপ্ত অবস্থায় থাকা ডেটাসমূহকে বিন্যস্তকরণ বা প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে তথ্যে রূপান্তর করে ব্যবহার উপযোগী করে তুলা হয়। এক্ষেত্রে কম্পিউটার বিভিন্ন প্রোগ্রাম ব্যবহার করে বিন্যস্তকরণের কাজটি সহজে এবং দ্রুত সম্পন্ন করতে পারে।
৩. তথ্য সংরক্ষণ (data storage): তথ্য ব্যবস্থায় তথ্য সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ভবিষ্যত ব্যবহারের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়ায় তথ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক্ষেত্রে কম্পিউটারের মেমোরী ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় প্রচুর সংখ্যক তথ্য সহজেই সংরক্ষণ করা সম্ভব।
৪. তথ্য সরবরাহ (information disseminate): সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা সমস্যা সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ সময় মত সরবরাহের ক্ষেত্রে কম্পিউটার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তথ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে অনেক সময় কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সুবিধাকে কাজে লাগানো হয়।
৫. আপডেটিং (updating): আপডেটিং বলতে তথ্যের হালনাগাদকরণকে বুঝায়। অর্থাৎ কম্পিউটার সর্বশেষ লেনদেন অথবা কাজের সর্বশেষ ফলাফলকে গ্রাহকের নিকট উপস্থাপন করে।
৬. তথ্য উপস্থাপন (data presentation): কোনো বিষয় সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়ার জন্য সংক্ষিপ্ত আকারে বা এক নজরে উপস্থাপন অথবা বিভিন্ন চিত্র, গ্রাফ, চার্ট, ইত্যাদির মাধ্যমে তথ্যকে সহজবোধ্যভাবে আকর্ষণীয় আকারে উপস্থাপন করা হয়। যেমন – অর্থনৈতিক বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের জন্য গ্রাফ এবং চার্ট ব্যবহার করা হয়।
৭. নেটওয়ার্কিং (networking): নেটওয়ার্কিং সুবিধা তথ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী পরিবর্তন সাধন করেছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের কম্পিউটারগুলো নেটওয়ার্কিং এর মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে বিশাল তথ্য ভান্ডারকে সকলের জন্য অধারিত করে দিয়েছে।
৮. ওয়েবসাইট (website): একটি প্রতিষ্ঠান নিজেকে গ্রাহকের নিকট তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে ওয়েবসাইট ব্যবহার করে থাকে। ওয়েবসাইটে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করা হয় আর ওয়েবসাইট তৈরী, এতে প্রবেশ, তথ্য আপলোড ও ডাউনলোড ইত্যাদির জন্য কম্পিউটার প্রয়োজন।
উপরের আলোচনায় বুঝা যায়, বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির যুগে কম্পিউটার ভিন্ন তথ্য ব্যবস্থার কথা চিন্তাই করা যায় না। [শারমিন জাহান সায়মা]
সহায়িকা: ইসলাম, মোঃ নজরুল; খান, মোঃ আলী আশরাফ; সম্পাদনায় : এম. এ . কালাম (২০১৮) ব্যবস্থাপনা তথ্য পদ্ধতি; ঢাকা: কমার্স পাবলিকেশন্স; পৃষ্ঠা ৩৫ – ৩৬।
Follow Us in Our Youtube Channel: GEONATCUL