পদ ও পদ প্রকরণ

পদ ও পদ প্রকরণ:

বাক্যে ব্যবহৃত বিভক্তিযুক্ত শব্দ ও ধাতুকে পদ বলে। বাংলা ভাষার বাক্যে ব্যবহৃত পদগুলো প্রধানত দুই প্রকার। যথা:
১. সব্যয় পদ ও
২. অব্যয় পদ।

সব্যয় পদ আবার চার প্রকার। যথা:
১. বিশেষ্য (noun);
২. বিশেষণ (adjective);
৩. সর্বনাম (pronoun) এবং
৪. ক্রিয়া (verb)।

পদ প্রকরণ:

অব্যয় পদসহ পদ মূলত পাঁচ প্রকার। যথা:
(১) বিশেষ্য (২) বিশেষণ (৩) সর্বনাম (৪) ক্রিয়া এবং (৫) অব্যয়।

১. বিশেষ্য (noun): কোনো কিছুর নামকে বিশেষ্য পদ বলে। ইংরেজিতে একে Noun বলা হয়। বাক্যের মধ্যে ব্যবহৃত যে সমস্ত পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, জাতি, সমষ্টি, বস্তু, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম বা গুণের নাম বুঝানো হয়, সে সমস্ত পদকে বিশেষ্য পদ বলে। যেমন: অভিযাত্রী, মানুষ, রহিম, করিম, ঢাকা, বরিশাল, কল্পনা, রাজ্য, দেশ, মঙ্গলগ্রহ, প্রভৃতি।

বিশেষ্য পদ প্রকরণ:

বিশেষ্য পদ ছয় প্রকার। যথা:
১. সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য (proper noun);
২. জাতিবাচক বিশেষ্য (common noun);
৩. বস্তু (বা দ্রব্য) বাচক বিশেষ্য (material noun);
৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য (collective noun);
৫. ভাববাচক বিশেষ্য (verbal noun) এবং
৬. গুণবাচক বিশেষ্য (abstract noun)।

১. সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য যে সব পদ দ্বারা কোনো ব্যক্তি, ভৌগোলিক স্থান বা সংজ্ঞা এবং গ্রন্থ বিশেষের নাম বিজ্ঞাপিত হয়, সে সব পদকে সংজ্ঞা (বা নাম) বাচক বিশেষ্য বলে। উদাহরণস্বরূপ –
(ক) ব্যক্তির নাম: নজরুল, ওমর, রফিক, সফিক, মাইকেল।
(খ) ভৌগোলিক স্থান: ঢাকা, দিল্লি, লন্ডন, মক্কা।
(গ) ভৌগোলিক সংজ্ঞা: (নদী, পর্বত, সমুদ্র, ইত্যাদি) মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর।
(ঘ) গ্রন্থের নাম: ‘গীতাঞ্জলি’, ‘অগ্নিবীণা’, ‘দেশে বিদেশে’, ‘বিশ্বনবি’।

২. জাতিবাচক বিশেষ্য: যে সব পদ দ্বারা কোনো একজাতীয় প্রাণী বা পদার্থের সাধারণ নাম বোঝায়, সে সব পদকে জাতিবাচক বিশেষ্য বলে। যেমন: মানুষ, পাখি, গরু, গাছ, পর্বত, নদী, ইংরেজ, প্রভৃতি।

৩. বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য: যে সব পদ দ্বারা কোনো উপাদানবাচক পদার্থের নাম বোঝায়, সে সব পদকে বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য বলে। এই জাতীয় বস্তুর সংখ্যা ও পরিমাণ নির্ণয় করা যায়। যথা: বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবন, পানি, প্রভৃতি।

৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য: যে সব পদ দ্বারা বেশকিছু সংখ্যক ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি বুঝায়, সে সব পদকে সমষ্টিবাচক বিশেষ্য বলে। যথা- সভা, জনতা, সমিতি, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝাঁক, পুলিশ, নৌবাহিনী, বহর, দল, প্রভৃতি।

৫. ভাববাচক বিশেষ্য: যে বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব প্রকাশিত হয়, সে সব পদকে ভাববাচক বিশেষ্য বলে। যথা- গমন (যাওয়ার ভাব বা কাজ), দর্শন (দেখার কাজ), ভোজন (খাওয়ার কাজ), শয়ন (শোয়ার কাজ), দেখা, শোনা, প্রভৃতি।

৬. গুণবাচক বিশেষ্য: যে সব বিশেষ্য পদ দ্বারা কোনো বস্তুর দোষ বা গুণের নাম বোঝায়, সে সব পদকে গুণবাচক বিশেষ্য বলে। যথা- সততা, মধুরতা, তারল্য, তিক্ততা, তারুণ্য, ইত্যাদি। তদ্রূপ: সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন, সুখ, দুঃখ, প্রভৃতি। [ইশরাত জাহান মিম]


সহায়িকা: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ (নবম-দশম), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ৯৭, ৯৮।


Follow Us in Our Youtube Channel: GEONATCUL


Leave a Reply