প্যালিয়েটিভ কেয়ার
প্যালিয়েটিভ কেয়ার বলতে মৃত্যু পথযাত্রী রোগীর জীবনের শেষ দিকের স্বাস্থ্য সেবাকে বুঝায়।
প্যালিয়েটিভ কেয়ারের নার্সিং ম্যানেজমেন্ট: যে সমস্ত রোগীর রোগ নিরাময়ের কোনো সম্ভাবনা নেই, সে সমস্ত রোগীকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সাহায্য করা। প্যালিয়েটিভ কেয়ারের মাধ্যমে এমনভাবে যত্ন নেয়া হয়, যাতে দীর্ঘমেয়াদী বা জীবন সঙ্কটাপন্ন রোগীদেরকে আরাম ও মানসিক সাপোর্ট প্রদান করা হয়। এর মাধ্যমে রোগীর যন্ত্রণা এবং অন্যান্য কষ্টকর লক্ষণগুলো কমানোর চেষ্টা করা হয়।
১. শারীরিক যত্ন:
ব্যথা ব্যবস্থাপনা: রোগীর ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধ প্রয়োগ ও নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয়।
শ্বাসকষ্ট: অক্সিজেন থেরাপি এবং শ্বাস প্রশ্বাসের আরামদায়ক পজিশন প্রদান।
বমি বমি ভাব ও বমি: এন্টি-এমেটিক ওষুধ দিয়ে লক্ষণ কমানো।
ত্বকের যত্ন: ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তন এবং ত্বকের সুরক্ষার জন্য সঠিক হাইজিন মেনে চলা।
২. মানসিক ও সামাজিক সহায়তা:
রোগীকে মানসিক সমর্থন প্রদান করা এবং রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ব্যক্তিগত যত্ন নেয়া। রোগী এবং তার পরিবারের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং তাদের মনোবল বাড়ানো। প্রয়োজন অনুযায়ী কাউন্সেলিং – এর ব্যবস্থা।
৩. আধ্যাত্মিক সহায়তা:
রোগীর আধ্যাত্মিক বিশ্বাসকে সম্মান জানিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক সহায়তা প্রদান। রোগীর আধ্যাত্মিক চাহিদা পূরণের জন্য পরিবারের সাথে সমন্বয় করা।
৪. খাদ্য ও পুষ্টি:
রোগীর অবস্থা অনুযায়ী তরল ও নরম খাবার সরবরাহ। যদি রোগী নিজে খেতে না পারে, তবে নাসোগ্যাস্ট্রিক টিউবের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহ করতে হবে।
৫. পরিবারের সহায়তা:
পরিবারকে রোগীর অবস্থার বিষয়ে সচেতন করা এবং কিভাবে যত্ন নেয়া হবে, তা সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেয়া। পরিবারের সদস্যদের মানসিক ও শারীরিক চাপ কমানোর জন্য সহযোগিতা করা।
৬. অন্তিম যত্ন:
রোগীর শেষ সময়ের সময় মানসিক ও শারীরিক শান্তি নিশ্চিত করা। পরিবারের সাথে শেষ সময় কাটানোর সুযোগ প্রদান এবং তাদের মানসিক সমর্থন দেয়া।
প্যালিয়েটিভ কেয়ারের লক্ষ্য হলো রোগীর আরাম, সম্মান এবং যত্নের মাধ্যমে জীবনের গুণগত মান বৃদ্ধি করা। [ইশরাত জাহান মিম]
সহায়িকা: H. Al-Hasib, Dr. Tanvir Islam, Fundamentals of Nursing (2019), Diploma in Nursing Science and Midwifery, Neuron Publication, Dhaka – 1205, Page: 177.