প্রকল্প মূল্যায়নের ধাপ

পরিকল্পিত উদ্দেশ্যের সাথে সম্পাদিত কার্যক্রম যাচাইয়ের জন্য প্রকল্প মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সুষ্ঠু, সুশৃংখল ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য কতকগুলো ধারাবাহিক ধাপ বা প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়। নিম্নে প্রকল্প মূল্যায়নের ধাপগুলো বর্ণনা করা হলো:

১. পরিকল্পনা গ্রহণ: প্রকল্প মূল্যায়নের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ একান্ত প্রয়োজন। ইনপুট, আউটপুট, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, প্রকল্পের কোন পর্যায়ে, কখন মূল্যায়ন করা হবে, তা পরিকল্পনায় উল্লেখ করতে হবে।

২. মূল্যায়নকারী নির্বাচন: প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মূল্যায়নকারী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন ধরনের প্রকল্পে কে বা কারা মূল্যায়ন করলে, তা ফলপ্রসূ হবে এ বিষয়টি বিবেচনা করে মূল্যায়নকারী নির্বাচন করতে হবে।

৩. তথ্য সংগ্রহ: প্রকল্প মূল্যায়নের তৃতীয় ধাপ হলো তথ্য সংগ্রহ। মূল্যায়নের জন্য কোন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করা হবে, তার উপর ভিত্তি করে মৌলিক প্রশ্নসমূহ নির্দিষ্ট করতে হবে।

৪. অনুমান ও নির্দেশক নির্ধারণ: যে প্রকল্প মূল্যায়ন করা হবে, তার ফলাফলের প্রয়োজনীয়, যথোপযুক্ত নির্দেশক ও অনুমান নির্ধারণ করতে হবে। কেননা প্রকল্প সংক্রান্ত এমন সব অনুমান বা নির্দেশক নির্ধারণ করতে হবে যেগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সহজেই ধারণা লাভ করা যায়।

৫. তথ্যের প্রকৃতি নির্ধারণ: প্রতিটি নির্দেশক ও অনুমানের জন্য কি তথ্য প্রয়েজন তা এ পর্যায়ে নির্ধারণ করা হয়। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কোন ধরনের সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রয়োজন, তা এই স্তরেই নির্ধারিত হয়ে থাকে।

৭. তথ্য বিশ্লেষণের পরিকল্পনা গ্রহণ: এ পর্যায়ে সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণের পদ্ধতি নির্ধারণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকতা অনুযায়ী বিভিন্ন পর্যায়ে মূল্যায়নকৃত তথ্য, কিভাবে বিশ্লেষণ করা হবে সেসব সিদ্ধান্ত এ পর্যায়ে নেয়া হয়।

৬. তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নির্বাচন: এ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে। তথ্যসমূহ অবশ্যই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। তথ্য সংগ্রহের পদ্ধতি বাস্তবসম্মত, নির্ভরযোগ্য ও স্বল্পব্যয়ে হওয়া উচিত।

৮. তথ্যের শ্রেণিবদ্ধকরণ: এ পর্যায়ে প্রয়োজনীয় উপাত্তগুলোকে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে শ্রেণিবদ্ধ করে বিশ্লেষণ করা হয়। প্রাপ্ত উপাত্তগুলোকে সুশৃংখলভাবে সাজিয়ে শ্রেণিবদ্ধকরণের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হলে তা অর্থপূর্ণভাবে প্রকাশ পায়।

৯. মূল্যায়ন প্রতিবেদন প্রণয়ন: এ ধাপে সার্বিকভাবে মূল্যায়নের প্রতিবেদন প্রণয়নের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রতিবেদনের রূপরেখা কেমন হবে এবং মূল্যায়ন প্রতিবেদন কখন কার কাছে প্রেরিত হবে, তাও এ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

১০. ফলোআপ করা: প্রকল্প মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার সর্বশেষ ধাপ হলো ফলোআপ করা। উল্লেখিত এ ধাপগুলো সম্পাদনের পর সার্বিকভাবে এক নজরে তা ফলোআপ করা হয় এবং সম্পাদিত সকল কিছু যথাযথ, কার্যকরী ও ধারাবাহিকভাবে হলে পরবর্তীতে একই ধরনের ধাপ অনুসরণের মাধ্যমে পরবর্তী প্রকল্প মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়।

পরিশেষে বলা যায়, প্রকল্প মূল্যায়নের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ধাপ অতিক্রম করতে হয়। উল্লেখিত এ ধাপসমূহ যথাযথভাবে অনুসরণ করে উদ্দেশ্য বর্ণিত প্রকল্পের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া সহজতর হয়। [শারমিন জাহান সায়মা]


সহায়িকা: ব্যতিক্রম সাজেশন (ব্যবস্থাপনা বিভাগ), প্রথম প্রকাশ: জুলাই, ২০১৯, পৃষ্ঠা – ২২১।


প্রকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply