প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস কাকে বলে?

পৃথিবীর অসংখ্য ও বিচিত্র ছোট বড় প্রাণীর মধ্যে নানারকম মিল ও অমিল রয়েছে। এ বৈচিত্র্যময় প্রাণিকূলের মধ্যে আণুবীক্ষণিক প্রাণী অ্যামিবা থেকে বিশাল আকারের তিমি রয়েছে। পরিবেশের বৈচিত্র্যতার বা ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে এবং বাসস্থানে প্রাণিরও বৈচিত্র্য বা ভিন্নতা দেখা যায়। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাণিজগৎকে জানার জন্য সমগ্র প্রাণিকূলকে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বিন্যস্ত করাকে প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস বলে। এ শ্রেণিবিন্যাসের ফলে প্রাণিজগৎ সম্পর্কে জানা অনেক সহজ হয়েছে।

পৃথিবীর বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাণীর সঠিক পরিমাণ জানা নেই। জানা যায়, এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত প্রাণীর প্রজাতি প্রায় ১৫ লক্ষ। তবে প্রতিনিয়ত আবিষ্কৃত প্রাণীর পরিমাণ বেড়েই চলেছে। আবিষ্কৃত এ বিপুল পরিমাণ প্রাণীর গঠন ও প্রকৃতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান অর্জনের সহজ উপায় হলো প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস করা।

প্রাণিদেহের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, বিভিন্ন প্রাণীর মধ্যে মিল ও অমিল, এবং প্রাণীসমূহের পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের উপর ভিত্তি করে প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়। প্রাণীসমূহের বৈশিষ্ট্য মিল ও অমিল, এবং প্রাণীসমূহের পরস্পরের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক অনুযায়ী বিভিন্ন ধাপে বিন্যস্ত করার পদ্ধতিকে প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস বলে। বর্তমানে প্রাণির শ্রেণিবিন্যাস জীববিজ্ঞানের একটি স্বতন্ত্র শাখা হিসেবে গড়ে উঠেছে। এর নাম প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা।

প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসের সবচেয়ে নিচের দিকের ধাপ হলো প্রজাতি। যেমন- মানুষ, সাপ, কুনোব্যাঙ, বিড়াল, গরু, কবুতর, ইত্যাদি এক একটি প্রজাতি। কোনো প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করার জন্য সে প্রাণীটিকে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ধাপে ধাপে সাজাতে হয়। সজ্জিত ধাপের প্রতিটিকে সঠিকভাবে বিন্যস্ত করতে হয়।

প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসের ক্ষেত্রে অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তবে, প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসের ইতিহাসে অ্যারিস্টটল, জন রে এবং ক্যারোলাস লিনিয়াসের নাম উল্লেখযোগ্য। সুইডিশ প্রকৃতিবিজ্ঞানী ক্যারোলাস লিনিয়াসকে প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাসের জনক বলা হয়। ক্যারোলাস লিনিয়াসই সর্বপ্রথম প্রাণির প্রজাতির বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করেন। তিনি প্রাণির দ্বিপদ নামকরণ বা দুই অংশবিশিষ্ট নামকরণ প্রথা প্রবর্তন করেন। একটি প্রাণির বৈজ্ঞানিক নাম দুই অংশ বা দুই পদবিশিষ্ট হয়। এ নামকরণকে দ্বিপদ নামকরণ বা বৈজ্ঞানিক নামকরণ বলা হয়। যেমন- মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম হোমো সেপিয়েন্স (homo sapiens), গরুর বৈজ্ঞানিক নাম বস ইন্ডিকাস (bos indicus)। বৈজ্ঞানিক নাম ল্যাটিন বা ইংরেজি ভাষাতে লিখতে হয়। [সংকলিত]


প্রাণিজগতের শ্রেণিবিন্যাস


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply