বন্দনা – শাহ মুহম্মদ সগীর
প্রথমে প্রণাম করি এক করতার।
যেই প্রভুর জীবদানে স্থাপিলা সংসার।।
দ্বিতীয়ে প্রণাম করোঁ মাও বাপ পাত্র।
যান দয়া হন্তে জন্ম হৈল বসুধায়।।
পিঁপড়ার ভয়ে মাও না থুইলা মাটিত।
কোন্ দিআ বুক দিআ জগতে বিদিত।।
অশক্য আছিলুঁ মুই দুর্বল ছাবাল।
তান দয়া হন্তে হৈল এ ধড় বিশাল।।
না খাই খাওয়াএ পিতা না পরি পরাএ।
কত দুক্ষে একে একে বছর গোঞাএ।।
পিতাক নেহায় জিউ জীবন যৌবন।
কনে না সুধিব তান ধারক কাহন।।
ওস্তাদে প্রণাম করোঁ পিতা হন্তে বাড়।
দোসর-জনম দিলা তিঁহ সে আহ্মার।।
আহ্মা পুরাবাসী আছ জথ পৌরজন।
ইষ্ট মিত্র আদি জথ সভাসদগণ।
তান সভান পদে মোহার বহুল ভকতি।
সপুটে প্রণাম মোহার মনোরথ গতি।।
মুহম্মদ সগীর হীন বহোঁ পাপ ভার।
সভানক পদে দোয়া মাগোঁ বার বার।
বন্দনা কবিতাংশের শব্দার্থ: বন্দনা – স্তুতি, প্রশংসা। করোঁ – করি। যান – যার। হন্তে – হতে, থেকে। বসুধায় – পৃথিবীতে। থুইলা – রাখল। অশক্য – অশক্ত, দুর্বল। আছিলুঁ – ছিলাম। মুই – আমি। ছাবাল – ছাওয়াল, ছেলে, সন্তান। গােঞাও – গুজরান করে, অতিবাহিত করে। পিতাক – পিতাকে। নেহায় – স্নেহে। বিদিত – জানা। জিউ – আয়ু জীবিত থাকা। কনে – কখনও। ধারক – ধারের, ঋণের। কাহন – ষােলপণ, টাকা। বাড় – বেশি। দোসর – দ্বিতীয়। পুরাবাসী – নগরবাসী। আহ্মার – আমার। মােহার – আমার। মনােরথ – ইচ্ছা, অভিলাষ। সপুটে – করজোড়ে। সভানক – সবার। তিঁহ – তিনিও।
‘ইউসুফ জোলেখা’ কাব্যের বন্দনা পর্ব থেকে গৃহীত কবিতাংশ। [সংকলিত]
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL