বাংলাদেশের গ্রাম সমাজের শিক্ষাব্যবস্থা

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার হার বেশ কম। কম শিক্ষার হারের দিক থেকে গ্রামীণ মহিলারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে শিক্ষাব্যবস্থা গতিশীল। এখানকার উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মক্তব-মাদ্রাসা। বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে আধুনিক শিক্ষা লাভের সুযোগ কম। এখানে মানুষ ধর্মীয় শিক্ষায় বেশি শিক্ষিত হয়। গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে শিশুদের ঝরে পড়ার হারও অনেক বেশি। আর্থিক সমস্যার দরুন গ্রামে শিশুরা অনেক ক্ষেত্রেই শ্রমজীবী শিশুতে পরিণত হয়। তাদেরকে কৃষিসহ অন্যান্য কাজে লাগানো হয়। ফলে তারা অনেকেই স্কুলে গিয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পায় না। বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যাও অনেক কম। গ্রামে বিশেষত মেয়েদের শিক্ষিত হওয়ার হার অত্যন্ত নিম্নমানের। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মান, শিক্ষা উপকরণ ও শিক্ষাদান পদ্ধতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজ এখনও অনেক পশ্চাৎপদ।

গ্রামের লেখাপড়ার মান ততটা উন্নত না হওয়ায় যে কোনো ভালো পর্যায়ে যেতে বা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করতে তাদেরকে অনেক কষ্ট করতে হয়। এখনও বাংলাদেশের অনেক গ্রামে মান্ধাতার আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত থাকায় শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক ভিত্তিই সঠিকভাবে গড়ে ওঠে না। ফলে যথাযথভাবে তাদের মেধার বিকাশও ঘটে না। এছাড়া গ্রামাঞ্চলগুলোতে বাস্তবমুখী বা কর্মমুখী শিক্ষার ব্যবস্থাও উৎসাহ পায় না। ফলে গ্রামাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা বিকল্প শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে এবং মূল লেখাপড়াতেও সেভাবে অগ্রসর হতে পারে না। এ কারণেই তাদেরকে অনেক পিছিয়ে থাকতে হয়। তবে সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সরকার গ্রাম সমাজের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব প্রদান করেছেন। বর্তমানে গ্রাম পর্যায়ে সরকারিভাবে নতুন নতুন শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি মেধা সম্পন্ন শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। [ইশরাত জাহান মিম]


সহায়িকা: সরকার, ড. মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, সমাজ বিজ্ঞান, লেকচার পাবলিকেশন লি., ঢাকা, পৃ: ২৩।


বাংলাদেশের গ্রাম সমাজের শিক্ষাব্যবস্থা কেমন?


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply