বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় স্থাপনযোগ্য শিল্পের শ্রেণিবিভাগ

রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড) একটি বিশেষ ধরনের শিল্পাঞ্চল। এটা সরকারের প্রত্যক্ষ সুযোগ সুবিধা নিয়ে গড়ে উঠে। মালিকানার দিক থেকে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় স্থাপনযোগ্য শিল্পসমূহকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়। যথা-

১। “A” শ্রেণি (Group-A): রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ১০০% বিদেশি পুঁজিনির্ভর শিল্পকে “A” শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিদেশে নাগরিকত্ব লাভ করেছে, এমন সব বাংলাদেশিরা এরূপ শিল্প স্থাপন করতে পারবে।
২। “B” শ্রেণি (Group-B): রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় বিদেশি ও বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় যে সব শিল্প স্থাপিত হয়, সে সবকে “B” শ্রেণির শিল্প বলে। উভয় দেশ মিলে এর কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।
৩। “C” শ্রেণি (Group-C): রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ১০০% বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের মালিকানায় প্রতিষ্ঠিত শিল্পকারখানাকে “C” শ্রেণির শিল্প বলা হয়ে থাকে।

উপর্যুক্ত তিন শ্রেণির মালিকানায় বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় প্রধানত যে সব শিল্প স্থাপনের অনুমতি রয়েছে, সেগুলোর নিম্নরূপ:

১। বয়ন ও পোশাক শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় তৈরি পোশাক, হোসিয়ারি, নিটিং ও এমব্রয়ডারি, বিশেষায়িত বয়ন সামগ্রী, কারপেট, কম্বল, ইত্যাদি শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।
২। গৃহস্থলী সামগ্রী: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় নানা ধরনের গৃহস্থলী সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি ও আসবাবপত্র তৈরির শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে ।

৩। চামড়াজাত শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় জুতা, চামড়ার তৈরি বিভিন্ন ধরনের দ্রব্যসামগ্রীর শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।
৪। খেলাধুলার সামগ্রী: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় খেলনা, খেলাধুলার সরঞ্জাম ও প্লাস্টিকের দ্রব্যাদি তৈরির শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে ।

৫। ইলেক্ট্রনিক্স দ্রব্যাদি: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় বিভিন্ন ধরনের ইলেক্ট্রনিক্স দ্রব্য ও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।
৬। কৃত্রিম অলংকার সামগ্রী এবং অপটিক্যাল দ্রব্যাদি: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় কৃত্রিম অলংকার সামগ্রী এবং অপটিক্যাল দ্রব্যাদি তৈরির শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।

৭। মেডিকেল যন্ত্রপাতি শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় মেডিকেল বা হাসপাতালে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের সার্জিক্যাল, ডেন্টাল ও বায়োলজিক্যাল যন্ত্রপাতি তৈরির শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।
৮। প্রকৌশল শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় বিভিন্ন ধরনের প্রকৌশল, দ্রব্য, বৈজ্ঞানিক পরিমাপক যন্ত্র ও দ্রব্য ইত্যাদি উৎপাদনের সাথে সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।

৯। ঔষধপত্র ও মৎস্য টিনজাত শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ঔষধপত্র ও মৎস্য টিনজাত শিল্প কারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে।
১০। ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প: বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় ফল প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পকারখানা স্থাপনের অনুমতি রয়েছে। [শারমিন জাহান সায়মা]


সহায়ক বই: জোয়ারদার, সুকেশ চন্দ্র; আলম, মোঃ শাহ; আখতার, সুফিয়া; চৌধুরী, সুশান্ত রায়; ইসলাম, মোঃ নজরুল; ২০২০, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ঢাকা: মিলেনিয়াম পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা ৪৮৫।


বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার শিল্পের শ্রেণিবিভাগ


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply