বিনগরায়ণ | De-urbanization

বিনগরায়ণ [De-urbanization] বলতে নগর এলাকার জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়াকে বুঝায়। বিনগরায়ণ হল নগরায়ণ (urbanization) প্রক্রিয়ার একটি বিপরীত অবস্থা। অর্থাৎ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই নগর জনসংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। তবে কতিপয় শহর বা নগরে জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসমান হারে হ্রাস পেতে থাকে। বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বা প্রাকৃতিক ও মানুষ সৃষ্ট কারণে নগর জনসংখ্যা কমে যাচ্ছে। যা বিনগরায়ণ শব্দটি দিয়ে সংজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন কারণে এরূপ বিনগরায়ণের মত ঘটনা ঘটতে পারে।
কোন একটি দেশ বা রাষ্ট্র বিভাজনের কারণে বিনগরায়ণের মত ঘটনা ঘটতে পারে। যেমন – ভারত বিভাজন হয়ে ভারত ও পাকিস্তান সৃষ্টির সময় ব্যাপকহারে হিন্দু জনগােষ্ঠীর পূর্ব পাকিস্তান (বর্তমান বাংলাদেশ) থেকে ভারতে অভিগমন করে। যার ফলে ঢাকা শহরে সাময়িক সময়ের জন্য বিনগরায়ণ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল।
কোন একটি দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে ব্যাপক বেকার সমস্যা সৃষ্টিতে বিনগরায়ণ হতে পারে। যেমন – সাম্প্রতিককালে মঙ্গোলিয়ায় সমাজতন্ত্রের পতন হয়। এর ফলে ব্যাপক বেকারত্বের সৃষ্টি হয়। বেকারত্বের কারণে মঙ্গোলিয়ার রাজধানী শহর ওলন বাটর থেকে বহু মানুষ গ্রামে চলে যায়। সেখানকার বহু মানুষ তাদের ঐতিহ্যবাহী পেশা যাযাবরীয় পশুপালনের কাজ গ্রহণ করে।
আবার দেখা যায় যে, শহর এলাকায় গৃহ সঙ্কট এবং পরিবেশ দূষণে কারণে এবং অত্যাধিক ভিড় এড়াতে শহরের লােকজন গ্রামের দিকে চলে যেতে দেখা যায়। যেমন – পশ্চিম ইউরােপে, বিশেষ করে লণ্ডন শহরে এরূপ বিনগরায়ণ দেখা যায়। লণ্ডন শহর এলাকায় গৃহ সঙ্কট ও পরিবেশ দূষণের কারণে এবং অত্যাধিক ভিড় এড়াতে শহরের লােকজন গ্রামের দিকে চলে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞগণ মনে করেন, দিন দিন মানুষের পরিবেশ সচেতনতা, গ্রামের অর্থনৈতিক উন্নতি এবং উন্নততর ও দ্রুত যােগাযােগ ব্যবস্থা গড়ে উঠার কারণে এধরনের বিনগরায়ণের মত অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
কখন কখন শহর বা নগর এলাকায় জীবানুঘটিত রোগব্যাধী বিশেষত ডেঙ্গু, করোনা, প্রভৃতির প্রাদুর্ভাব ফলে বিনগরায়ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। মহামারী সৃষ্টিকারী বিভিন্ন রোগব্যাধীর ফলে অফিস, আদালত ও কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেলে বহু লোক কর্মসংস্থানের অভাবে শহর ছেড়ে গ্রামের দিকে চলে যেতে পারে।
সহায়িকা: বাকী, আবদুল, ২০১৩, ভুবনকোষ, সুজনেষু প্রকাশনী, ঢাকা।
বিনগরায়ণ কি?
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL