ভাইরাস | Virus

ভাইরাস (Virus) হলো রোগ সৃষ্টিকারী বস্তু। Virus একটি ল্যাটিন শব্দ, যার অর্থ হলো বিষ। F C Bawden এবং N E Pirie ভাইরাসের রাসায়নিক প্রকৃতি বর্ণনা করেন। এ পর্যন্ত ৫০০০ ধরনের ভাইরাসের বর্ণনা করা হয়েছে। ভাইরাস আকারে এতোই ছোট যে ইলেকট্রনিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে দেখতে হয়, সাধারণ অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে দেখা যায় না।
ভাইরাসের গড় ব্যাস 8 – 300 nm (ন্যানোমিটার)। ভাইরাস সাধারণত ১২ nm (যেমন- পোলিও ভাইরাস) হতে ৩০০ nm (যেমন- তামাকের মোজাইক ভাইরাস) পর্যন্ত হয়ে থাকে। তাই ভাইরাসকে বলা হয় অতি-আণুবীক্ষণিক, (Ultra-microscopic); অর্থাৎ ভাইরাস হলো রোগ সৃষ্টিকারী অতি-অণুবীক্ষণিক বস্তু। সাধারণ সর্দি, ইনফ্লুয়েঞ্জা, ডেঙ্গু, চিকনগুনিয়া, জলাতঙ্ক, গুটিবসন্ত, জলবসন্ত, বার্ড ফ্লু, ভাইরাল হেপাটাইটিস, ইত্যাদি রোগের কথা প্রায়ই শুনে থাকি, কখনো নিজেরাই আক্রান্ত হই। এগুলো সবই ভাইরাসঘটিত রোগ। অর্থাৎ ভাইরাস দ্বারা এ রোগগুলো হয়ে থাকে। মানুষের ন্যায় অন্যান্য জীবজন্তু (যেমন- গরু, ভেড়া, মহিষ, ছাগল, ইঁদুর, মুরগি), এমনকি গাছপালারও ভাইরাসঘটিত রোগ হয়।

ভাইরাসের দেহ বাহিরের প্রোটিন আবরণ এবং অভ্যন্তরস্থ নিউক্লিক অ্যাসিড (DNA অথবা RNA) এই দু’টি অংশ নিয়ে গঠিত। কাজেই ভাইরাস হলো নিউক্লিক অ্যাসিড ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত রোগ সৃষ্টিকারী অতি-আণুবীক্ষণিক সত্ত্বা। ভাইরাস জীবদেহের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে রোগ সৃষ্টি করে থাকে। কিন্তু জীবদেহের বাহিরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে।
সুতরাং, ভাইরাস হলো নিউক্লিক অ্যাসিড (কেন্দ্রীয় অংশ) ও প্রোটিন (আবরণ) দিয়ে গঠিত অকোষীয়, অতি-আণুবীক্ষণিক সত্ত্বা ও বাধ্যতামূলক পরজীবী জৈবকণা। যা জীবদেহের অভ্যন্তরে সক্রিয় হয়ে রোগ সৃষ্টি করে কিন্তু বাহিরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় বিরাজ করে।ভাইরাসকে জীবাণু (বা অণুজীব) না বলে ‘সত্ত্বা’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। কেননা, জীবদেহ কোষ দিয়ে গঠিত, কিন্তু ভাইরাস অকোষীয়। তাছাড়া এরা জীবদেহের অভ্যন্তরে বংশ বৃদ্ধি করতে পারলেও জীবদেহের বাহিরে একেবারেই নিষ্ক্রিয় রাসায়নিক পদার্থ হিসেবে বিরাজ করে।
১৮৯২ সালে রুশ উদ্ভিদবিজ্ঞানী দিমিত্রি আইভানোভসকি সর্বপ্রথম তামাক মোজাইক (Tobacco Mosaic) কে ভাইরাস হিসেবে আখ্যায়িত করেন। তিনিই ভাইরাস নামটি প্রদান করেন। তবে তিনি কোনো ভাইরাস শনাক্ত করতে পারেননি। এ সত্ত্বেও তাকেই ভাইরাস আবিষ্কারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। আমেরিকান বিজ্ঞানী W. M. Stanley সর্বপ্রথম তামাক মোজাইক ভাইরাস (TMV) কে পৃথক করে কেলাসিত করতে সক্ষম হন। [ইশরাত জাহান মিম]
সহায়িকা: হাসান, ড. মোহাম্মদ আবুল, (২০১৭), জীববিজ্ঞান (একাদশ – দ্বাদশ), পৃষ্ঠা ১০৩।
ভাইরাস এর জনক কে
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL