ভূ-আকৃতি বিদ্যা | Geodesy

ভূ-আকৃতি বিদ্যা [Geodesy] বলতে সাধারণত পৃথিবীর ভূমির আকার-আকৃতিগত বিশেষ জ্ঞানকে বুঝায়। এ বিদ্যাটি হলো মূলত পৃথিবীর আকার, ভূমি বন্ধুরতা, বক্রতা, ওজন, ঘনত্ব, প্রভৃতি নির্ণয় ও পরিমাপ সম্পর্কিত একটি বিজ্ঞান। এ বিদ্যার লক্ষ্য হলো পৃথিবীর আকার, আকৃতি এবং মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সঠিকভাবে বোঝা এবং বর্ণনা করা, সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে এসব পরিমিতিগুলোর পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করা এবং মডেল বা নকশা তৈরি করা। ভূ-আকৃতি বিদ্যা বা জিওডেসির মূল দিকগুলো হলো:
১। পৃথিবীর আকৃতি: ভূ-আকৃতি বিদ্যায় পৃথিবীর আকৃতি অধ্যয়ন করে, এ পৃথিবীকে একটি নিখুঁত গোলক হিসেবে নয় বরং একটি উপবৃত্তাকার হিসেবে বিবেচনা করে। পৃথিবীর নিখুঁত গোলক থেকে মাত্রা এবং বিচ্যুতি নির্ধারণ করার প্রতি এ বিদ্যায় লক্ষ্য রাখা হয়।
২। মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্র: ভূ-আকৃতি বিদ্যায় পৃথিবীর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র পরিমাপ করে এবং মডেল বা নকশা তৈরি করে। মহাকর্ষের বৈচিত্র্য বোঝা বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে, যেমন: স্যাটেলাইট পজিশনিং এবং সমুদ্রবিদ্যায়।
৩। রেফারেন্স ফ্রেম: ভূ-আকৃতি বিদ্যায় পজিশনিং এবং নেভিগেশনের জন্য রেফারেন্স ফ্রেম স্থাপন করে। এর মধ্যে অক্ষাংশ এবং দ্রাঘিমাংশ স্থানাঙ্কের মতো সিস্টেমগুলো অন্তর্ভুক্ত, যা মানচিত্র অঙ্কন এবং নেভিগেশনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪। বিকৃতি বিশ্লেষণ: ভূ-আকৃতি বিদ্যায় সময়ের সাথে সাথে পৃথিবী পৃষ্ঠের পরিবর্তনগুলো নিরীক্ষণ এবং বিশ্লেষণ করে। যেমন: টেকটোনিক প্লেটের নড়াচড়া, অবনমন এবং অন্যান্য বিকৃতি।
৫। স্যাটেলাইট ও ভূ-আকৃতি বিদ্যা: স্যাটেলাইট প্রযুক্তি আবির্ভাবের সাথে সাথে ভূ-আকৃতি বিদ্যা বা জিওডেসি আরও উন্নত হয়েছে। জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) এর মতো স্যাটেলাইট-ভিত্তিক সিস্টেমগুলো সুনির্দিষ্ট অবস্থান এবং নেভিগেশনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সুতরাং উপর্যুক্ত কাজগুলোসহ ভূ-আকৃতি বিদ্যার আরও বিভিন্ন কাজ রয়েছে, এর মধ্যে মানচিত্র, ভূমি জরিপ, নেভিগেশন এবং পরিবেশগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ উল্লেখযোগ্য। এ বিদ্যাটি হলো এমন একটি বহু-বিষয়ক ক্ষেত্র, যার ব্যবহারিক প্রয়োগে পৃথিবীর ভৌত বৈশিষ্ট্যগুলো বোঝা এবং মডেল বা নকশা প্রণয়ন করার জন্য গণিত, পদার্থবিদ্যা, জ্যোতির্বিদ্যা এবং প্রকৌশলের উপাদানগুলো ব্যবহার করার প্রয়োজন রয়েছে। [সংকলিত]
ভূ-আকৃতি বিদ্যা কি?
ছবি: Geodesy
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL