রক্তশূন্যতা | Anemia
আমাদের দেশে অধিকাংশ মানুষের রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা একটি সাধারণ রোগ। রক্তশূন্যতা হলো দেহের এমন একটি অবস্থা, যখন বয়স এবং লিঙ্গভেদে রক্তে হিমোগ্লোবিনের ঘনত্ব স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যাওয়া বা রক্তের অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা হ্রাস পাওয়া।
রক্তশূন্যতার কারণ: লৌহ, ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন বি-১২ ইত্যাদি খাদ্যের মূখ্য উপাদানের অভাব ঘটলে রক্তশূন্যতা রোগ দেখা যায়। রক্তশূন্যতা বা রক্তস্বল্পতার শতাধিক কারণ জানা যায়। পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি না হয়েও রক্তস্বল্পতা হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে দেখা যায়, সাধারণত লৌহের অভাবে রক্তস্বল্পতা বেশি হয়।
শিশুদের, প্রজননের উপযুক্ত বয়সী নরীদের (১৫-৪৫ বছর) এবং গর্ভবতীদের রক্তশূন্যতা রোগ বেশি হয়। লৌহের ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। যেমন, অত্যাধিক রক্তপাত ঘটলে, কৃমির আক্রমণে, লৌহ গঠিত খাদ্য উপাদান শরীরে যথাযথভাবে শোষিত না হলে, বাড়ন্ত শিশু বা গর্ভবতী নারীদের খাদ্যে লৌহের পরিমাণ কম থাকলে, অন্ত্রে সংক্রমণ ঘটলে, এবং কম বয়সী শিশুদের খাদ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণ লৌহের অভাব হলে।

রক্তশূন্যতার লক্ষণ: যখন রক্তশূন্যতা ধীরে ধীরে হয়, তখন লক্ষণগুলো অনেক সময় অস্পষ্ট থাকে। দুর্বলতা অনুভব করা, মাথাব্যথা, মনমরা ভাব, চোখে অন্ধকার দেখা, খাওয়ার অরুচি, বুক ধরফড় করা ইত্যাদি।
রক্তশূন্যতার প্রতিকার ও চিকিৎসা: রক্তশূন্যতা রোগ প্রতিরোধের জন্য লৌহসমৃদ্ধ খাবার, যেমন- যকৃৎ, মাংস, ডিম, চিনাবাদাম, শাকসবজি, বরবটি, মসুর ডাল, খেজুরের গুড়, ইত্যাদি খেতে হয়। পরীক্ষা করে অন্ত্রে কৃমির বা হুকওয়ার্ড – এর সংক্রমণ নিশ্চিত হলে কৃমিনাশক ঔষধ সেবন করা যায়।
প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লৌহ উপাদানযুক্ত ঔষধ সেবন করে এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতিত রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা করা বিপজ্জনক হতে পারে। কেননা রক্তস্বল্পতার এমন কিছু ধরন (যেমন: থ্যালাসেমিয়া) রয়েছে, যেখানে প্রচলিত মাত্রায় লৌহজাতীয় ঔষধ বা খাদ্য গ্রহণ করলে রোগী আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাই রক্তস্বল্পতার চিকিৎসা শুরু করার আগে তার সঠিক কারণ নির্ণয় করা আবশ্যক। [ইশরাত জাহান মিম]
সহায়িকা : জীববিজ্ঞান (নবম- দশম), জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বই, পৃষ্ঠা ১০১-১০২।
রক্তশূন্যতার কারণ
Image Source: wikipedia.org
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL