শক্তি, শক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং শক্তির পরিমাপ

মানুষসহ সকল প্রাণির জীবনধারণের জন্য শক্তি প্রয়োজন। মানুষের দেহ সব সময় একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রা বজায় রাখে। এবং এ তাপমাত্রা বজায় রাখার জন্য তাপশক্তির প্রয়োজন। এ শক্তি মানুষ খাদ্য থেকে পেয়ে থাকে। খাদ্য গ্রহণের পর দেহ কোষে বিভিন্ন রাসায়নিক ক্রিয়া ঘটে, ফলে শক্তি উৎপন্ন হয় এবং দেহে শক্তির চাহিদা পূরণ হয়। নিম্নে শক্তি, শক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং শক্তির পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

শক্তি (energy): জীবিত মানুষের দেহ সব সময় একটি নির্দিষ্ট তাপশক্তি বজায় রাখে। তাপশক্তি হল এক ধরনের ক্ষমতা। যে কোনো কাজ করতে হলে তাপশক্তির প্রয়োজন। শক্তি ব্যতীত জীবনধারণ সম্ভব নয়। মানুষের দেহে খাদ্য তাপশক্তি রূপে ব্যবহৃত হয়। তবে সব ধরনের খাদ্য তাপ উৎপাদন করে না। মানুষের দেহে তাপশক্তি উৎপাদন করে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ও স্নেহপদার্থ। শক্তি পরিমাপ করা যায় না, তাপ পরিমাপ করা যায়। তাপ মাপা যায় বলেই শক্তির পরিমাণ বুঝা যায়।

শক্তির প্রয়োজনীয়তা (necessity of energy): জীবমাত্রই জীবনধারণের জন্য খাদ্য প্রয়োজন। আর খাদ্যের অন্যতম কাজ শক্তি উৎপাদন করা। শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্যের অভাবে দেহের কোষকলা নিজেই দগ্ধ হয়ে শক্তি উৎপাদন করে, যার ফলে দেহ ক্ষয় হয়ে রুগ্ন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। এছাড়া সম্পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় থাকলেও দেহের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন: বৃক্ক, ফুসফুস, হৃৎপিন্ডের কার্যকারিতা অব্যাহত থাকে। দুইটি কারণে একজন পূর্ণাঙ্গ ব্যক্তির শক্তির প্রয়োজন হয়। যথা:

১. দেহের অভ্যন্তরীণ কার্য নির্বাহের জন্য; এবং
২. শারীরিক পরিশ্রম ও অন্যান্য কাজের জন্য।

শক্তির পরিমাপ (measurement of energy): মানুষের দেহে খাদ্য পরিপাক ও পরিশোষণের ফলে যে শক্তি উৎপন্ন হয়, তা আমারা তাপ আকারে পেয়ে থাকি। খাদ্য দহনের ফলে উৎপন্ন তাপশক্তি বিভিন্ন কাজে ব্যয় হয়। এ শক্তির ব্যয়কে পরিমাপ করার জন্য যে একক (unit) ব্যবহৃত হয়, তাকে ক্যালরি বলে। এক কিলোগ্রাম পানির তাপমাত্রা এক ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বাড়াতে হলে যে পরিমাণ তাপের প্রয়োজন হয় তাকে এক কিলোক্যালরি বা ক্যালরি বলে।

কিলোক্যালরি (kilocalory) হলো তাপশক্তি মাপার একক। মানুষের বিভিন্ন কারণে শক্তি ব্যয় হয়। আহার না করে সম্পূর্ণ বিশ্রামরত অবস্থায় শুয়ে থাকলেও যে পরিমাণ শক্তি ব্যয় হয়, তাই সর্বনিম্ন শক্তির পরিমাপ। এ পরিমাপ বিভিন্ন ব্যক্তির ক্ষেত্রে বিভিন্ন হয়। তবে ব্যক্তিবিশেষের ক্ষেত্রে এটি নির্দিষ্টই থাকে, কোন পরিবর্তন হয় না। এ নির্দিষ্ট সর্বনিম্ন শক্তির পরিমাণকে মৌল বিপাক বা basal metabolism বলে। [ইশরাত জাহান মিম]


শক্তির প্রয়োজনীয়তা এবং শক্তির পরিমাপ


Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL


Leave a Reply