সর্বনাম পদ: সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ
সংজ্ঞা:
বিশেষ্যের পরিবর্তে যে শব্দ ব্যবহৃত হয়, তাকে সর্বনাম পদ বলে। সর্বনাম সাধারণত ইতোপূর্বে ব্যবহৃত বিশেষ্যের প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দ। যেমন: আবুল একজন ছাত্র। সে খুবই মেধাবী। এখানে, দ্বিতীয় বাক্যে ‘তার’ শব্দটি প্রথম বাক্যের ‘আবুল’ বিশেষ্য পদটির প্রতিনিধি স্থানীয় শব্দরূপে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই, ‘তার’ শব্দটি সর্বনাম পদ। বিশেষ্য পদ অনুক্ত থাকলেও ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষ্য পদের পরিবর্তে সর্বনাম পদ ব্যবহৃত হতে পারে। যেমন:
ক) ‘যারা’ দেশের ডাকে সাড়া দিতে পারে, ‘তারাই’ তো সত্যিকারের দেশপ্রেমিক।
খ) ধান ভানতে ‘যারা’ শিবের গীত গায়, ‘তারা’ স্থির লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না।
প্রকারভেদ:
বাংলা ভাষার ব্যবহৃত সর্বনাম পদসমূহকে নিম্নলিখিত কয়েকটি ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে।
১) ব্যক্তিবাচক বা পুরুষবাচক: আমি, আমরা, তুমি, তোমরা, সে, তারা, তাহারা, তাঁর, তিনি, এ, এরা, ও, ওরা।
২) আত্মবাচক: স্বয়ং, নিজে, খোদা, আপনি।
৩) সামীপ্যবাচক: এ, এই, এরা, ইহারা, ইনি, ইত্যাদি।
৪) দূরত্ববাচক: ঐ, ঐসব, সব।
৫) সাকল্যবাচক: সব, সকল, সমুদয়, তাবৎ।
৬) প্রশ্নবাচক: কে, কি, কী, কোন, কাহার, কার, কিসে?
৭) অনির্দিষ্টবাচক: কোন, কেহ, কেউ, কিছু।
৮) ব্যতিহারিক: আপনা আপনি, নিজে নিজে, আপসে, পরস্পর, ইত্যাদি।
৯) সংযোজগজ্ঞাপক: যে, যিনি, যাঁরা, যার, যাহারা, ইত্যাদি।
১০) অন্যাদিবাচক: অন্য, অপর, পর, ইত্যাদি।
সর্বনামের পুরুষ:
‘পুরুষ’ একটি পারিভাষিক শব্দ। বিশেষ্য, সর্বনাম ও ক্রিয়ারই পুরুষ আছে। বিশেষণ ও অব্যয়ের পুরুষ নেই। ব্যাকরণে পুরুষ তিন প্রকার।
১. উত্তম পুরুষ: স্বয়ং বক্তাই উত্তম পুরুষ।
২. মধ্যম পুরুষ: প্রত্যক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি বা শ্রোতাই মধ্যম পুরুষ। তুমি, তোমরা, তোমাকে, তোমাদের, তোমাদিকে, আপনি, আপনারা, আপনাদের, প্রভৃতি সর্বনাম শব্দ মধ্যম পুরুষ।
৩. নাম পুরুষ: অনুপস্থিত অথবা পরোক্ষভাবে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি, বস্তু বা প্রাণীই নাম পুরুষ। সে, তারা, তাহারা, তাদের, তাহাকে, তিনি, তাঁকে, তাঁরা, তাঁদের, প্রভৃতি নাম পুরুষ (সমস্ত বিশেষ্য শব্দই নাম পুরুষ)। [ইশরাত জাহান মিম]
সহায়িকা: বাংলা ভাষার ব্যাকরণ(নবম-দশম), জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যবই, বাংলাদেশ, পৃষ্ঠা ১০২, ১০৩, ১০৪।
সর্বনাম পদের সংজ্ঞা ও প্রকারভেদ
Follow Us in Our Youtube Channel: GEONATCUL