সামাজিক ব্যয় বিশ্লেষণে ইউনিডো পদ্ধতি ও লিটল মিরলইস পদ্ধতি
সাধারণত সামাজিক ব্যয় সুবিধা বিশ্লেষণের দুটি পদ্ধতি পরিলক্ষিত হয়। যথা- (ক) ইউনিডো পদ্ধতি ও (খ) লিটল মিরলইস পদ্ধতি। এই দুই পদ্ধতির মধ্যে কিছু মিল ও অমিল রয়েছে। নিম্নে পদ্ধতি দুটি সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো:
(ক) ইউনিডো পদ্ধতি (UNIDO method): জাতিসংঘের শিল্প উন্নয়ন সংস্থা (UNIDO) ১৯৭৮ সালে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে, যার নাম “Guide to practical project appraisal”। উন্নয়নশীল দেশের সামাজিক আয়-ব্যয় বিশ্লেষণের কাঠামো এখানে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকল্পের এ আয়-ব্যয় বিশ্লেষণের জন্য ইউনিডো পদ্ধতিতে পাঁচটি ভাগ রয়েছে।
১. বাজার দামের ভিত্তিতে আর্থিক লাভজনকতার হিসাব।
২. অর্থনৈতিক দক্ষতা বা মূল্যের পরিমাপের মাধ্যমে প্রকল্পের নিট সুবিধা পাওয়া।
৩. সঞ্চয় ও বিনিয়োগের উপর প্রকল্পের প্রভাব সমন্বয় সাধন করা।
৪. আয় বণ্টনের উপর প্রকল্পের প্রভাব সমন্বয় সাধন করা।
৫. ভালো ও খারাপ পণ্যের উপর প্রকল্পের প্রভাব সমন্বয় সাধন করা, যার সামাজিক মূল্য তাদের অর্থনৈতিক মূল্য থেকে আলাদা হয়।
(খ) লিটল মিরলইস পদ্ধতি (Little Mirrlees method): I.M.D Little & J.A. Mirrlees এরা দু’জন মিলে সামাজিক ব্যয় সুবিধা বিশ্লেষণের একটি পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা L M Approach নামে পরিচিত। এই পদ্ধতির মূল কথা হল উন্নয়নশীল দেশগুলোতে যে পরিমাণ সম্পদ ব্যবহার হয়, তার সামাজিক ব্যয় এবং তার জন্য পরিশোধকৃত মূল্যের একটা উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। এই পদ্ধতিতে সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ণয় করার জন্য ছায়া মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
১. LM পদ্ধতিতে সঞ্চয়কে পরিমাপক মাপকাটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
২. LM পদ্ধতিতে ব্যয় সুবিধা নির্ণয়ের জন্য আন্তর্জাতিক বা বর্ডার বিবেচনা করা হয়।
৩. এই পদ্ধতিতে সকল স্তরেই ভোগকে মূল্যবান মনে করা হয়।
৪. এই পদ্ধতিতে সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ করার জন্য ছায়া মূল্যের সাহায্য নেয়া হয়।
৫. এই পদ্ধতিতে বাট্টাকৃত নগদ প্রবাহ কৌশল ব্যবহৃত হয়।
পরিশেষে বলা যায় যে, সামাজিক আয় ব্যয় বিশ্লেষণে UNIDO পদ্ধতির পাশাপাশি লিটল মিরলইস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। [শারমিন জাহান সায়মা]
সহায়িকা: রাসুল, ড. মোঃ সিরাজুর এবং ইসলাম, মোঃ নজরুল, প্রকল্প পরিকল্পনা, (২০১৬/২০১৭), কমার্স পাবলিকেশন্স, ঢাকা।
সামাজিক ব্যয় বিশ্লেষণ পদ্ধতি
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL