সামাজিক স্তরবিন্যাসের বৈশিষ্ট্য
সামাজিক স্তরবিন্যাসের বৈশিষ্ট্য:
জৈবিক, সাংস্কৃতিক, আর্থিক, প্রভৃতি বিভিন্ন উপাদানের উপর ভিত্তি করে সামাজিক স্তরবিন্যাস করা হয়ে থাকে। আর সামাজিক স্তরবিন্যাসের কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ করা যায়। এগুলো হলো –
প্রথমত: স্তরবিন্যাস মূলত সামাজিক বিষয়। স্তরবিন্যাসের জৈবিক উপাদান হলো – বয়স, লিঙ্গ, উচ্চতা, শক্তি, নরবংশ, ইত্যাদি। এসব উপাদান সামাজিক পদমর্যাদার অবস্থা নির্ণয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজের সদস্যবৃন্দের বিচারে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত।
দ্বিতীয়ত: স্তরবিন্যাস সর্বত্রই লক্ষণীয়। এমন কোনো সমাজ নেই, যেখানে কোনো রকমের স্তরবিন্যাস নেই। ক্ষমতা, আয় এবং পদমর্যাদার তারতম্য হেতু স্তরবিন্যাস একটা সার্বজনীন বিষয় বলে বিবেচিত।
তৃতীয়ত: যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসমতা সর্বত্রই দেখা যায়। তথাপি সমাজভেদে অসমতার প্রকৃতি ও মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন রূপ নেয়।
চতুর্থত: স্তরবিন্যাস হলো সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং সমাজ কাঠামোর মূলকথা। সামাজিক জীবনযাত্রার ভিন্নতা এবং সামাজিক জীবনের সুযোগ-সুবিধার ভিন্নতা, একটি বাস্তব সত্য ঘটনা।
পঞ্চমত: সামাজিক স্তরবিন্যাসের বৈশিষ্ট্য সকল সমাজে এক নয়। কারণ বিভিন্ন সমাজে বিভিন্ন শ্রেণি বা স্তরের উৎপত্তি ভিন্ন ভিন্ন কারণে হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, শিল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশের সামাজিক স্তর ও অনুন্নত দেশের সামাজিক স্তরবিন্যাসের মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য দেখা যায়।
ষষ্ঠত: সামাজিক স্তরবিন্যাস সামাজিক মিথস্ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। স্তরের একটি অন্তর্মুখী বা ব্যক্তির মনোভাব সম্পৃক্ত দিক আছে। বিশেষ ধরনের কিছু মিথস্ক্রিয়া কেবল একই স্তরভূক্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে সংগঠিত হয়।
সপ্তমত: সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, স্তরবিন্যাসের ফল হলো এমন, যা মানুষের জীবনের সম্ভাবনা বা জীবনযাত্রার (life style) নানা প্রকার সুযোগ সৃষ্টি করে। [ইশরাত জাহান মিম]
সহায়িকা: সরকার, ড. মোহাম্মদ আব্দুল মালেক, (জুন ২০১৩) সমাজ বিজ্ঞান ১ম পত্র (একাদশ-দ্বাদশ), ঢাকা: লেকচার পাবলিকেশন্স, পৃষ্ঠা – ১৪৪।
Follow Us in Our Youtube Channel: GEONATCUL