ঐতিহাসিক চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ | ফেনী
চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ:
চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ বাংলাদেশের ফেনী জেলাধীন ছাগলনাইয়া উপজেলার মাটিয়াগোদা গ্রামে ভূঁইয়া বাড়িতে অবস্থিত। ছাগলনাইয়া উপজেলা সদর থেকে সড়কপথ ধরে প্রায় ৭ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে গেলে ভূঁইয়া বাড়ির এ ঐতিহাসিক মসজিদে পৌঁছানো যায়।
মুঘল স্থাপত্যকলায় নির্মিত এই মসজিদের ছাদে তিনটি গম্বুজ রয়েছে। এক সারিতে অবস্থিত তিনটি গম্বুজের মধ্যে মাঝখানের গম্বুজটির আকার তুলনামূলক বড়। মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে গম্বুজের উপরে পদ্ম কলসের নয়নাভিরাম নকশা করা হয়েছে। এছাড়া এটির বাহিরের দিকে একই ধরনের স্থাপত্যশৈলীর বারোটি মিনার এবং প্রবেশ পথের উপরের দেয়ালে ফুলেল নকশা শোভিত রয়েছে। মসজিদের সামনের প্রবেশ পথের উপরে দেয়ালের গাত্রে শিলালিপিতে এর পরিচিতি রয়েছে।
ঐতিহাসিক এই মসজিদটি মুঘল সাম্রাজ্য স্বীকৃত খাজনা আদায়কারী চাঁদগাজী ভূঁইয়া ১৬৩৫ থেকে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী যে কোনো এক সময়ে ফেনীর মাটিয়াগোদা গ্রামে নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। জানা যায় যে, চাঁদগাজী ভূঁইয়া ফেনীর পূর্বাঞ্চলের একজন স্বনামধন্য জমিদার ছিলেন। তিনি একজন ধর্মভীরু ও জনহিতৈষী ব্যক্তি। মুঘল আমলে এই অঞ্চলে তাঁর আগমন ঘটে বলে জানা যায়। ১৬৩৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি ফেনীর সোনাগাজী নামক স্থানের দক্ষিণ পশ্চিমে সর্বপ্রথমে আগমন করেন। পরবর্তী সময়ে নদীর ভাঙ্গনের কারণে তার প্রচুর ধন সম্পদ এবং লোক লস্করসহ বর্তমান মহামায়া ইউনিয়নের মাটিয়াগোদা গ্রামে বসতি স্থাপন করেন। এবং মুঘল সনদপ্রাপ্ত জমিদার রূপে তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
ইতিহাস থেকে আরও জানা যায়, তার জমিদারী ত্রিপুরা রাজ্যের পাদদেশে এবং বর্তমান ফেনী জেলার পূর্বাঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। মুঘল সাম্রাজ্যের পতনের পর তৎকালীন ত্রিপুরা মহারাজ লক্ষণাদিত্য মানিক্য বাহাদুর কর্তৃক চাঁদগাজী ভূঁইয়ার জমিদারীর পতন ঘটে।
১ অক্টোবর, ১৯৮৭ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেট অনুসারে ঐতিহাসিক চাঁদগাজী ভূঁইয়া মসজিদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের একটি সংরক্ষিত পুরাকীর্তি। ঐতিহাসিক এ মসজিদটি বর্তমানে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভূক্ত এবং তত্ত্বাবধানে রয়েছে। [মো: শাহীন আলম]
তথ্যসূত্র: প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ।
Follow Us in Our Youtube Channel: GEONATCUL