কাঠশিল্পের অপূর্ব নিদর্শন: মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ

কাঠশিল্পের অপূর্ব নিদর্শন মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ। বাংলাদেশে পিরোজপুর জেলাধীন মঠবাড়িয়া উপজেলা থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার উত্তরে উদয়তারা বুড়িরচর গ্রাম। এ গ্রামের উত্তরে মমিন মসজিদ সড়কের পশ্চিম পাশে ঐতিহ্যবাহী আকন বাড়ি অবস্থিত। এ বাড়ির সামনে রয়েছে মমিন মসজিদ নামক দারুশিল্প বা কাঠশিল্পের এক অপূর্ব নিদর্শন।
জানা যায়, মৌলভী মমিন উদ্দিন আকন নামক জনৈক ব্যক্তি ১৯১২-১৯২০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মমিন উদ্দিন আকন ছিলেন ফরায়েজী আন্দোলনের অন্যতম নেতা। আরও জানা যায়, দিল্লীর ২২জন কাঠমিস্ত্রি মিলে দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটি নির্মাণ করে।
সম্পূর্ণ কাঠের উপরে কারুকাজ দিয়ে নির্মিত এ মসজিদটি এক অপূর্ব নিদর্শন। মসজিদটির ভিতর ও বাহির দেয়ালের কাঠের উপর লতাপাতা, ফুল ও আরবি লিপি উৎকীর্ণ শিল্পকর্মে সজ্জিত করা হয়েছে। মসজিদটি নির্মাণে লোহার পেরেক ব্যবহার করা হয়নি। এ মসজিদের মেঝেটি সিমেণ্ট দিয়ে পাকা করা হয়েছে। এ মসজিদের ছাদ বা চালায় টিন ব্যবহার করা হয়েছে। আয়তাকার মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৩.৫০ মিটার ও প্রস্থ ১.৫০ মিটার।
মানচিত্র: মমিন মসজিদের অবস্থান।
মসজিদটির শিল্পকর্মে ইন্দো-পারসিক, ইউরোপীয় স্থাপত্যিক শিল্প এবং স্থপতির নিজের মৌলিক উৎকর্ষের সংমিশ্রণ সুন্দরভাবে ফুটে উঠেছে। কারুকার্যখচিত দারুশিল্পকর্মের এ মসজিদটিকে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার অদ্বিতীয় বিবেচনা করা হয়। ঐতিহ্যবাহী মসজিদটিকে ১৭ এপ্রিল, ২০০৩ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ‘সংরক্ষিত পুরাকীর্তি’ ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে পুরাকীর্তিটি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে সংরক্ষিত রয়েছে। [মো. শাহীন আলম]
Follow Us in Our YouTube channel: GEONATCUL