ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদ | শেরপুর
বাংলাদেশের শেরপুর জেলাধীন ঝিনাইগাতী উপজেলার হাতিবান্দা ইউনিয়নের লয়খা নামক গ্রামে ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদ অবস্থিত। এ মসজিদটি স্থানীয়দের কাছে ঐতিহ্যবাহী লয়খা জামে মসজিদ নামেও পরিচিত। শেরপুরের ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদটির ভূ-স্থানাঙ্ক বা জিও কো-অর্ডিনেট (GeoCoordinate) হল 25°06’45.5″N 90°02’13.3″E (25.112639, 90.037028)।
ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদ একটি উঁচু প্লাটফরমের উপরে বর্গাকার পরিকল্পনায় নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের প্রতিটি বাহুর দৈর্ঘ্য ৭.৪৬ মিটার। এক গম্বুজবিশিষ্ট মসজিদটির পূর্ব দেয়ালে ১টি প্রবেশ পথ রয়েছে। মসজিদটির উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালেও ১টি করে প্রবেশ পথের মত রয়েছে। উত্তর ও দক্ষিণ দেয়ালের প্রবেশ পথ ২টি জালিকা নকশার মত ছিদ্রযুক্ত করে বন্ধ রাখা হয়েছে। প্রতিটি প্রবেশ পথের খিলানে বহুপত্র (multifoil) নকশার প্রতিফলন দেখা যায়। মসজিদ অভ্যন্তরের পশ্চিম দেয়ালে ১টি অলংকরণবিহীন মিহরাব রয়েছে।
মসজিদের চার কোণায় ১টি করে মিনারের মত স্তম্ভ রয়েছে। বৃত্তাকার ভূমি পরিকল্পনার স্তম্ভগুলোর উপরে ছোট ক্ষুদ্রগম্বুজ (turret) রয়েছে। মসজিদটির গম্বুজগুলোর উপরে পদ্মকলস নকশা শোভিত চূড়া (finial) রয়েছে। ছাদের কেন্দ্রে অবস্থিত বড় গম্বুজটির নিচের অংশে ড্রামের (drum) উপরে সাপের ফণা সদৃশ মারলন নকশা রয়েছে। মসজিদটির সামনের দেয়ালে প্রবেশপথের উপরে আরবি বর্ণমালার ১টি শিলালিপি রয়েছে। জানা যায় যে, মসজিদটি নির্মাণে পাতলা টালির মত বর্গাকার ইট এবং দেয়ালের আস্তরে ঝিনুক চূর্ণের সাথে সুরকি ও পাট বা তন্তু জাতীয় আঁশ ব্যবহার করা হয়েছে।
ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদটিকে ২ এপ্রিল, ১৯৮৭ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে এটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভূক্ত ও তত্ত্বাবধানে রয়েছে। মসজিদের সামনের দেয়ালে বিদ্যমান খোদাই করা আরবি বর্ণমালার শিলালিপিতে ঘাগড়া খান বাড়ি জামে মসজিদের নির্মাণকাল হিজরী ১০২৮ সাল উল্লেখ রয়েছে বলে জানা যায়। এ হিসেবে মসজিদটির নির্মাণকাল খ্রিস্টীয় ১৬০৭-৮ সাল। আরও জানা যায় যে, আজিমোল্লাহ খান শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ঘাগড়ার এ প্রাচীন মসজিদটি প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তবে মসজিদটিতে সুলতানী ও মুঘল নির্মাণ ও স্থাপত্যশৈলী সম্মিলিত প্রতিফলন দেখা যায়। [১, ২] [মো. শাহীন আলম]
image source: wikipedia.org
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL