বাংলাদেশের জগন্নাথ মন্দির | রত্ন মন্দির

জগন্নাথ মন্দির, বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে কুমিল্লায় অবস্থিত, একটি বিখ্যাত প্রাচীন মন্দির। ইতিহাস থেকে জানা যায়, খ্রিস্টীয় সতেরো শতাব্দীর শেষ দিকে তৎকালীন ত্রিপুরার মহারাজা দ্বিতীয় রত্নমাণিক্য এ মন্দিরটির নির্মাণকাজ শুরু করেন। এবং পরবর্তীতে মহারাজা কৃষ্ণকিশোর মাণিক্য মন্দিরটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করেন।
অষ্টকোণাকৃতির স্থাপত্য পরিকল্পনার মন্দিরটি কয়েকধাপে ক্রমহ্রাসমানভাবে সরু হয়ে উপরে উঠে গেছে। এটির কেন্দ্রীয় চূড়ার উপরে পদ্মপাপড়ী ও কলসের অলংকরণ রয়েছে। কোনো কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক মন্দিরটির চূড়ার স্থাপত্য নকশা ইউরোপিয়ান গির্জা স্থাপত্য নকশা দ্বারা প্রভাবিত বলে উল্লেখ করেছেন। বাহির থেকে দেখে তিন তলাবিশিষ্ট মনে হলেও প্রকৃতপক্ষে মন্দিরটির অভ্যন্তরে সর্বমোট পাঁচটি তলা রয়েছে।

এ মন্দিরটি কোনো কোনো প্রত্নগবেষকের কাছে সতেররত্ন মন্দির হিসেবে পরিচিত। আরও জানা যায়, সতেরোটি চূড়া থাকায় এ মন্দিরের নামকরণ হয় সতেরোরত্ন মন্দির। অর্থাৎ মন্দির স্থাপত্যের প্রকারভেদ অনুসারে মন্দির শীর্ষে থাকা প্রতিটি চূড়াকে এক একটি রত্ন বলা হয়। এ মন্দিরটি সতেরো রত্নবিশিষ্ট হলেও কালের পরিক্রমায় অধিকাংশ রত্ন (চূড়া) ধ্বংস হয়ে গেছে (?)। সম্ভবত ১৮৮৭ সালে সংগঠিত ৮.৪ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাতে এ মন্দিরের অধিকাংশ রত্ন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছিল (?)।
বর্তমানে মন্দিরটির শীর্ষদেশের মাঝখানে বড় আকারের ১টি রত্ন (প্রায় মোচাকৃতি), এবং রত্নটির চারদিকের আটটি বাহুর মধ্যে চারটি বাহুতে ১টি করে তুলনামূলক মাঝারী আকারের মোট ৪টি রত্ন (চৌচালা আকৃতির?) ও অপর চার বাহুতে ২টি করে ছোট আকারের মোট ৮টি রত্ন (দোচালা আকৃতির) দেখা যায়। এ হিসেবে এ মন্দিরের রত্ন সংখ্যা দাঁড়ায় ১৩টি এবং মন্দিরটিকে তেরোরত্ন (ত্রয়োদশ রত্ন) মন্দির বলা যেতে পারে (?)।
মন্দির স্থাপত্যশিল্পের অপূর্ব নিদর্শন সতেরোরত্ন মন্দির বাংলাদেশে কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলায় কৃষ্ণপুর গ্রামে অবস্থিত। কুমিল্লা টাউন হল থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার পূর্ব দিকে জগন্নাথ বাড়ির সামনে প্রাচীন এ মন্দিরটি দেখা যায়। মন্দিরটি স্থানীয়ভাবে জগন্নাথ মন্দির নামেই সুপরিচিত। এ ধরনের স্থাপত্য নকশার মন্দির বাংলাদেশে খুবই বিরল (?)। [মো: শাহীন আলম]
জগন্নাথ মন্দির কে প্রতিষ্ঠা করেন?
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL