চট্টগ্রামের পাহাড়ে হাতির বাংলো: ইতিহাস আর প্রকৃতির অপূর্ব মিলন
চট্টগ্রামের পাহাড় আর সমুদ্রের মাঝখানে লুকিয়ে আছে এক ঐতিহাসিক রত্ন [ভিডিও লিংক] — হাতির বাংলো (elephant bungalow)। প্রথম দেখায় মনে হবে, যেন প্রকৃতি আর স্থাপত্য হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে আছে।
চট্টগ্রামের ফুসফুসখ্যাত সিআরবির পাহাড়ে দৃষ্টিনন্দন আদি এই বাংলো তৈরি হয়েছিল ব্রিটিশ আমলে, উনবিংশ শতাব্দীতে। কাঠ আর ইট-সুরকির মিশ্রণে পাহাড়ের উপরে বানানো হয়েছিল এই অনন্য স্থাপনাটি। ছাদের নকশা, দেয়াল আর প্রবেশপথ সব মিলিয়ে হাতির মুখ, শুঁড় ও হাতির পিঠের মতো দেখতে হওয়ায় স্থানীয়রা একে নাম দিয়েছে—“হাতির বাংলো।”
স্থাপত্যের দিক থেকে এটি সত্যিই বিস্ময়কর। ইউরোপীয় ধাঁচের সঙ্গে মিশে গেছে দেশীয় কারুকাজ। লাল ইটের দেয়াল, কাঠের জানালা আর খোলা বারান্দা থেকে চোখে পড়ে এক অন্যরকম দৃশ্য—একদিকে পাহাড়ের সবুজ, অন্যদিকে সমুদ্রের নীল।
তবে হাতির বাংলো শুধু স্থাপত্য নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক ইতিহাসও। ব্রিটিশ আমল থেকে পাকিস্তান আমল—বহু প্রশাসনিক কাজ এখানেই হয়েছে। পরবর্তীতে শিল্পী, সাহিত্যিক আর গবেষকদের আড্ডাতেও মুখর ছিল এই বাংলো। স্থানীয় গল্প-কথায় এখনো এর ছায়া পাওয়া যায়।
আর প্রকৃতির সৌন্দর্য? তা যেনো ছবির মতো। বাংলোর চারপাশে ঘন বৃক্ষরাজি, পাহাড়ি ঝোপঝাড় আর পাখির কলতান এক শান্ত পরিবেশ তৈরি করে। শহরের কোলাহল থেকে দূরে এসে এখানে দাঁড়ালে সময় যেন থমকে যায়।
আজও হাতির বাংলো চট্টগ্রামের ঐতিহ্য আর প্রকৃতির প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইতিহাস, সংস্কৃতি আর ভ্রমণের স্বাদ—সব একসঙ্গে পেতে চাইলে হাতির বাংলো হতে পারে আপনার পরবর্তী গন্তব্য।
✍️ লেখক: মো. শাহীন আলম
Follow Us on Our YouTube channel: GEONATCUL