বিশ্ব ব্যাংক | World Bank

১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারের ব্রেটন উডস্- এ অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের মুদ্রা ও অর্থসংস্থান সংক্রান্ত সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৪৪ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ব ব্যাংক (World Bank – WB) প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বব্যাংক মূলত দুইটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে গঠিত। এগুলো হল: (১) ইন্টারন্যাশনাল ব্যাংক ফর কনস্ট্রাকশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট (International Bank for Reconstruction and Development – IBRD) এবং (২) আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (International Development Association – IDA)। বিশ্ব ব্যাংকের সদর দফতর ওয়াশিংটনের ডিসিতে অবস্থিত। প্রতিটি সদস্য দেশের রাজধানীতে বিশ্ব ব্যাংকের অফিস রয়েছে। বিশ্ব ব্যাংকের সনদকে স্বীকৃতি দিয়ে যে কোন দেশই এর সদস্য হতে পারে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিশ্ব ব্যাংকের মোট সদস্য দেশের সংখ্যা ১৮৯টি

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রায় শেষপর্বের দিকে বিশ্বব্যাংক গঠনকালে তার উদ্দেশ্য হিসেবে যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার ও বিনির্মাণ এবং অনুন্নত এলাকাসমূহের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আর্থিক সহায়তাদানকে নির্ধারণ করে। একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন অর্থসংস্থান প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর কার্যাবলীর পরিধি অত্যন্ত ব্যাপক। প্রতিষ্ঠাকালে বিশ্ব ব্যাংকের কার্যাবলী নিম্নোক্তভাবে নির্ধারিত হয়:

১. সদস্য দেশগুলোতে উৎপাদনমুখী উদ্দেশ্যে পুঁজি বিনিয়োগের সুবিধা সৃষ্টি করে তার পুনর্গঠন ও উন্নয়নের সহায়তা করা।
২. সদস্য দেশসমূহে বিদেশী বেসরকারি পুঁজি বিনিয়োগ সম্প্রসারিত করা এবং এর জন্য বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের পুঁজি অংশীদারিত্ব বা তাদের বিনিয়োগের নিশ্চয়তা প্রদান করা।
৩. আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের দীর্ঘমেয়াদী ভারসাম্যপূর্ণ প্রবৃদ্ধিতে সহায়তা লেনদেন ভারসাম্য বজায় রেখে তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং জীবন যাত্রার মান ও শ্রমের পরিবেশ উন্নত করা।
৪. ছোট বড় নির্বিশেষে অধিক জরুরী এবং উপযোগী প্রকল্পসমূহে অগ্রাধিকার দিয়ে সেগুলোর জন্য অর্থসংস্থানের সহায়তা করা।
৫. এমনভাবে কার্য পরিচালনা করা যাতে যুদ্ধকালীন অর্থনীতি থেকে শান্তির সময়ে অর্থনীতির উত্তরনের পথ সুগম হয়।

বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণদান কর্মসূচী ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং ঋণদান ছাড়াও বিশ্বব্যাংক বিভিন্ন দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের গতিধারা সম্পর্কে প্রতিবেদন তৈরী করে, তাদের অগ্রগতি পর্যালোচনা করে, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কার সম্পর্কে সুপারিশমালা প্রণয়ন করে এবং বিভিন্ন প্রকার নীতিগত ও কারিগরী পরামর্শ প্রদান করে। [শারমিন জাহান সায়মা]


সহায়িকা: রাসুল, ড. মোঃ সিরাজুর এবং ইসলাম, মোঃ নজরুল, প্রকল্প পরিকল্পনা, (২০১৬/২০১৭), কমার্স পাবলিকেশন্স, ঢাকা, পৃষ্ঠা ৪৭২।


Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *